নির্বাচন কমিশন দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের মধ্যে থেকেই নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে এবং নির্বাচনের সময় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। কোন দল বা সরকার নির্বাচন পরিচালনা করে না। নির্বাচনকালীন সরকার শুধু তাদের রুটিন ওয়ার্ক করে।
বিএনপি মহাসচিবের নির্বাচন কমিশন ও সার্চ কমিটি নিয়ে লাগাতার বিষোদগারের প্রতিবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
আওয়ামী লীগের অধীনে দেশে কোনো সুষ্ঠু ভোট হতে পারে না- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘জনমনে ধোঁয়াশা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও মনগড়া মন্তব্য করে যাচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। সুতরাং নির্বাচন পরিচালনার কাজে সরকারের পক্ষ থেকে কখনোই নির্বাচন কমিশনের উপর প্রভাব বিস্তার করা হয়নি, হবেও না। বরং সরকার সর্বদাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করে থাকে।
বিএনপির শাসনামলে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন কমিশনকে যথেচ্ছভাবে ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে মাগুরা ও মিরপুর উপনির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপির অভূতপূর্ব ঘটনার জন্ম দেয় বিএনপি। গণবিরোধী অবস্থান নিয়ে অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন যে নির্বাচন করেছিল; তা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সমুজ্জ্বল স্মৃতির পাতায় একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।’
স্বৈরতন্ত্রের নীতিতে পুষ্ট বিএনপির গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি এক ধরনের অশ্রদ্ধা ও অবজ্ঞা রয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতাসীন হয়ে জোর জবরদস্তি হয়ে টিকে থাকা যাদের রাজনৈতিক কৌশল, তাঁরা গণতান্ত্রিক রীতিনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ হবে, এটাই স্বাভাবিক। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্রের নাগপাশ থেকে মুক্ত বাংলাদেশ আজ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুপ্রতিষ্ঠিত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দল সর্বোপরি সকল স্তরের জনগণের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
দুঃখ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘একটি দেশবিরোধী চিহ্নিত রাজনৈতিক শক্তি যখন লাগাতারভাবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকে, তখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তবে যে কোনো মূল্যে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশবিরোধী এই মহল ও তাঁর প্রতিভূ বিএনপিকে পরাস্ত করবে।’
তিনি একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল দেশপ্রেমিক জনগণকে পাকিস্তানি ভাবধারার এই প্রেতাত্মা থেকে দূরে থাকারও আহ্বান জানান।