রাবি প্রতিনিধি: ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর তালাইমারি বিজয় ২৪ চত্বরে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
সমাবেশ থেকে তিনটি দাবি উত্থাপিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির অন্যতম সমন্বয়ক মো. ফাহিম রেজা দাবিগুলো পাঠ করেন। সেগুলো হলো:
১. এককেন্দ্রিকতা বাদ দিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এই আন্দোলনের সব অংশীদারকে রাষ্ট্রগঠনে সমানভাবে সুযোগ দিতে হবে।
২. ছাত্র-জনতার মতামত না নিয়ে উপদেষ্টা নিয়োগের জবাবদিহি করতে হবে। কোন প্রক্রিয়ায় এবং কোন আঁধার ঘরে বসে সচিবালয়ে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয় তা অবিলম্বে জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে।
৩. ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণ ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে ছায়া সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যা এই সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি দায়বদ্ধ করবে।
এসময় আন্দোলনকারীরা ‘উপদেষ্টায় ওরা কারা, জবাব চায় বিপ্লবীরা’, ‘উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা, চলছে কেন অবহেলা’, ‘ঢাকাকেন্দ্রিক রাষ্ট্রগঠন, চলবে না চলবে না’, ‘আমার ভাই কবরে, ফারুকী কেন সরকারে’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামী লীগের দালারেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মো. মেশকাত চৌধুরী বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্রদের সঙ্গে আবার প্রতারণা করা হচ্ছে। সরকার গঠনে ছাত্রদের অংশদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে ফ্যাসিবাদের দোসরদের ডেকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এই দেশে পুনরায় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার যে চক্রান্ত করা হচ্ছে, তা কখনো বাস্তবায়ন হবে না।’
আরেক সমন্বয়ক মো. ফাহিম রেজা বলেন, ‘রাষ্ট্রগঠন ও রাষ্ট্র পুনঃগঠনে ঢাকার বাইরে কাউকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। অথচ রাষ্ট্র প্রত্যেকটি জনগণের। এখানে কোনো বঙ্গের বন্ধুত্ব চলবে না। প্রত্যেকটি অঞ্চলকে এই রাষ্ট্রগঠনে সমান সুযোগ দিতে হবে।’
ঢাকার এসি রুমে বসে তৃণমূলের জনগণের মন বোঝা সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে এ সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্রমান্বয়ে জনগণের রোষানলে পড়তে থাকবে। আজ বিভিন্ন কায়দায় উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যারা গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকারকে ফুয়েল দিয়ে লালন-পালন করেছেন, তারা কীভাবে উপদেষ্টা প্যানেলে জায়গা পান?’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষক ও মানবাধিকারকর্মী রাশেদ রাজন, সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম ও সালাউদ্দিন আম্মার।