ফয়সাল আজম অপু : বুধবার (৯ নভেম্বর) সিভিল সার্জন কনফারেন্স রুমে লাইট হাউস এর আয়োজনে এবং আইসিডিডিআরবিথর সহযোগিতায় এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে সচেতনতামূলক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায়োরাটাইজড এইচআইভি প্রিভেনশন এন্ড ট্রিটমেন্ট সার্ভিসেস ফর কী পপুলেশন ইন বাংলাদেশ কর্মসূচির আওতায় এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ কল্পে সাংবাদিক, আইনজীবি, ধর্মীয় নেতা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ এবং স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সেনসিটাইজেশান সভার আয়োজন করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ এস. এম মাহমুদুর রশিদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা মেডিক্যাল অফিসার মাসুম শাহরিয়ার।
প্রকল্প বিষয় নিয়ে বিস্তারিত পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে কার্যক্রম তুলে উপস্থাপনা করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ লাইট হাউসের ড্রপ-ইন সেন্টার ম্যানেজার মোঃ সালাহ উদ্দিন জুয়েল। উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন নবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মোসাঃ মাসকুরা বেগম, কাউন্সিলর আনোয়ারা বেগম, জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মোঃ ওমর ফারুক, মাছরাঙা টিভির জেলা প্রতিনিধি ডাবলু কুমার ঘোষ, গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ সোনিয়া আকতার, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল শামস, অধ্যাপক শাহিন কাউসার, মাওলানা আহম্মদ আলি প্রমূখ।
আরও উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল আজম অপু, মাওলানা এলাম উদ্দিন সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইমাম, আইনজীবি, শিক্ষক ও বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিভিল সার্জন জনাব ডাঃ এসএম মাহমুদুর রশিদ বলেন, লাইট হাউস চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ঝুকিপূর্ন জনগোষ্ঠীকে সফলতার সাথে সেবা প্রদান করে আসছে। তাদের এ প্রচেষ্ঠা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি আরোও বলেন সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার জন্য চাপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এইচআইভি/এইডস এর ঝুঁকি বেশি। তাই সরকারী প্রচেষ্টার পাশাপাশি জনসাধারনকেও সচেতন হতে হবে।
কেননা সচেতনতা হচ্ছে এইচআইভির প্রতিরোধের চাবিকাঠি। তিনি সচেতনতা বৃদ্ধিতে ধর্মীয় মূল্যবোধ বজায় রাখার জন্য ইমামদের ভুমিকা রাখার আহবান জানান। তিনি বলেন এমএসএম ও হিজড়াদের মধ্যে এইচআইভি/এইডস ঝুঁকি হ্রাস করা এবং তাদের মানবাধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য সকলের সহায়তা প্রয়োজন।
সভায় লাইট হাউসের পরিচিতি ও কার্যক্রম এবং অর্জন নিয়ে আলোচনা করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ লাইট হাউসের ড্রপ-ইন সেন্টার ম্যানেজার মোঃ সালাহ উদ্দিন জুয়েল জানান, লাইট হাউস চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ ১৯ জেলায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এবং এর মাধ্যমে ঝুকিপূর্ন এমএসএম ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি/এইডস ঝুঁকি হ্রাস, স্বাস্থ্যসেবা, যৌনরোগের চিকিৎসা, এইচআইভি পরীক্ষা এবং এইচআইভি/এইডস তথ্যসেবা প্রদান করে আসছে। এছাড়াও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইমাম সাংবাদিক, আইনজীবি, শিক্ষকসহ সকল মানুষ কিভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করতে পারেন তা নিয়ে আলোচনা করে থাকে। সভায় করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, বিশ্বে এইচআইভি পজেটিভের সংখ্যা ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ কোটি ৭৭ লক্ষ। ২০২০ সালে এইচআইভি/এইডস এ সংক্রমিত হয়েছেন ১৫ লক্ষ এবং ২০২০ সালে মারা গেছেন ৬ লাখ ৮০০ জন।
প্রতিবেশী দেশগুলোর কারণে এইচআইভি ও এইডস এর আধিক্য আমাদের অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে প্রতি বছর এইচআইভি ও এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এ রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জিও-এনজিও প্রতিনিধিসহ সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।