তানোরে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ


তানোর প্রতিনিধি :  তানোরে এক ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে দরিদ্রদের বিভিন্ন উপকার ভোগী ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী ৭জন ব্যাক্তি বাদি হয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবার পৃথক পৃথক ভাবে অবিযোগ দায়ের করেছেন। 

তবে, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের মাধ্যমে এলাকার দরিদ্রদের যাচাই-বাছাই করে এসব বিভিন্ন উপকার ভোগীদের তালিকা করে বিনা মুল্যে এসব কার্ড বিতরণ করার নির্দেশনা থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের দলীয় নেতা-কর্মিরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপুর্বক তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন উপকার ভোগী ভাতার কার্ড নিয়ে দরিদ্রদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছেন এসব আ’লীগ নেতারা বলে জানান কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন প্রামানিক। তিনি বলেছেন এসব বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিলা বিষয়ক কর্তকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

এলাকাবাসী ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি ধানুরা গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে গিয়াস উদ্দিন তার নিজ গ্রামের দরিদ্র শ্রেনীর লোকদেরকে সরকারের বিভিন্ন উপকার ভোগী ভাতার কার্ড করে দেয়ার প্রলোভন দিয়ে প্রায় ২০/২৫জনের কাছ থেকে ১হাজার টাকা থেকে ৪হাজার টাকা করে নেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তাদের নামে কোন কার্ড বরাদ্ধ না হওয়ায় ভুক্তভোগী ওইসব হতদরিদ্ররা আ’লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনের কাছে টাকা ফেরৎ চাইলে আজ নয় কাল করে ঘুরাতে থাকেন।

এভাবেই একে একে এলাকার সকলের মধ্যেই টাকা নেয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগীরা ওই আ’লীগ নেতার কাছে টাকা ফেরৎ চাইলে টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকার করেন। এঘটনায় ভুক্তভোগী দরিদ্ররা টাকা ফেরৎ না পেয়ে মঙ্গলাবার তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবার পৃথক পৃথক ভাবে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগকারী ভুক্তভোগীরা হলেন, কামারগাঁ ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড এলাকার ধানুরা গ্রামের মৃত ইমাম মন্ডলের ছেলে আরশাদ আলীকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে ৪হাজার টাকা, মৃত ইয়ানুচ দেওয়ানের স্ত্রী আতর বেগমকে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে তার কাছ থেকে ৩হাজার টাকা, মৃত বুধা মন্ডলের স্ত্রীকে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে ২হাজার ৭শ’ টাকা, মুনসুর মন্ডলের স্ত্রী রাশেদা বেগমকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে সাড়ে ৩হাজার টাকা, জামাতউল্লাহর ছেলে হাতেমকে ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড দেয়ার নামে ১হাজার টাকা, ছামান মন্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীরকে বিজিডি’র কার্ড দেয়ার নামে ৪হাজার টাকা নেন।

এনিয়ে যোগাযোগ করা হলে কামারগাঁ ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন টাকা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।

এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন প্রামানিক বলেন, ধানুরা গ্রামের লোকজনের মুখে বিষয়টি শুনেছি, কিন্তু এবিষয়ে আমার কিছু করার নাই। তিনি বলেন, সরকার দরিদ্রদের সাবলম্বী করতে বিভিন্ন কার্ডের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে সহায়তা করছে। এসব কার্ড দেয়ার নামে টাকা নেয়ার প্রমান হলে সরকারী ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ বলেও দাবি করেন তিনি।

এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।