ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর ধামইরহাটে শহর বা উপজেলার আধুনিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত আড়ানগর ইউনিয়নের রবিদাস পাড়ার শতাধিক পরিবার। যাতায়াতের জন্য একটি ভাল রাস্তা না থাকায় জরুরী প্রয়োজনে চিকিৎসা, কৃষি পন্য পরিবহনসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয় ওই গ্রামের বাসিন্দাদের।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ৫নং আড়ানগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে রবিদাস পাড়ায় বসবাস করেন প্রায় ১ শত ২০ টি পরিবার। সাংসারিক ও অন্যান্য প্রয়োজনে বাড়ী হতে উপজেলা সদরে বা ইউনিয়ন পরিষদে আসতে হলে দ্রুত পৌছানোর কোন সুযোগ নেই অবহেলিত ওই গ্রামের মানুষদের, রাস্তা সরু হওয়ায় একটি সাইকেল বা ভ্যান প্রবেশ করলে অন্য কেউ হেটে যেতে পারে না। বর্ষাকালে একটু বৃষ্টিতেই এই রাস্তার কাদায় অতি সরু গলিটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে দাড়ায়। ওই গ্রামে অবস্থিত মন্দিরে ধর্মীয় প্রার্থনা করতে এসে পড়তে হয় বিপাকে।
চাষীরা মাঠের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মুল্য পায়না রাস্তা না থাকার কারণে, গর্ভবতী বা প্রসুতি মায়েদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন রোগীরা দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পৌছতেও পারেনা। এমনকি মেয়ে বিয়ে দিতেও তাদের রাস্তার কারণে অনেক বিয়েও ভেঙ্গে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। সাংবাদিকদের দেখে গ্রামের শতাধিক পরিবার রাস্তায় তাৎক্ষনিক মানববন্ধন করে তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা জানান।
ভুক্তভোগী পিন্টু রবিদাস জানান, আমরা অজোপাড়া গ্রামে বসবাস করি, আমাদের শহরের সুবিধা প্রয়োজন হলেও বাধ সাথে সরু রাস্তা, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও ১০ বছরে তার কোন বাস্তবায়ন নেই, ধান মাড়াই করতে হলে কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি মাঠে প্রবেশ করানো যায়, এতে দিগুন খরচ গুনতে হয় আমাদের। ওই এলাকার বাসিন্দা গোপাল ও ঝন্টু রবিদাস জানান, ‘আমাদের গ্রামের মেম্বরের সরকারি চাকরী হওয়ায় সে মেম্বরী থেকে বাদ হয়েছে, আমাদের আর দেখার যেন কেউ নেই।’
এ বিষয়ে আড়ানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী কমল তার সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ অনেক আগেই থেকে গ্রামবাসীরা রাস্তার কথা বলছে, তবে উপজেলা চেয়ারমানসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই তাদের কষ্ট লাঘবে বিকল্প রাস্তা তৈরী করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি এবং তা বাস্তবায়ন করবো।’
ধামইরহাট উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলী হোসেন জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে কোন কোডভুক্ত রাস্তা অবহেলায় থাকলে তা সংস্কার কিংবা নির্মান করা হবে, আর যদি কোড না থাকে জনস্বার্থে ও জনপ্রতিনিধিরা যথাযথ পদক্ষেপ নিলেই উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের মাধ্যমে তার কোড তৈরী করে রাস্তাটি নির্মানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’