নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় শিশু ধর্ষণ ও অপহরণ মামলায় দুই আসামীর যাবজ্জীবন ও ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙে প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে তিনমাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টায় নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় প্রদান করেন। দুই মামলার রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌশলী ছিলেন মোঃ মকবুল হোসেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- শিশু ধর্ষণ যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত জেলার ধামইরহাট উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সালাম (৫০) এবং শিশু অপহরনে সাজাপ্রাপ্ত নওগাঁ সদর উপজেলার চকচাঁপাই গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে সুমন হোসেন (২৫)।
আদালত সূত্রে জানা যায়- ২০১৯ সালের ৫ জুন ঈদের দিন দুপুর ২ টার দিকে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর গ্রামের আট বছরের শিশুকে রুটি ও সেমাই খাওয়ানোর কথা বলে একই গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সালাম তার শয়ন ঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে জয়পুরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নাবালিকা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে শিশু’র বাবা একই দিন ধামইরহাট থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। তদন্ত শেষে একমাত্র আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
২০২২ সালে ৫ জুলাই মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহন শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৪ জুন ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন সমাপ্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শ্রবন করা হয়। এরপর রায় ঘোষণার জন্য ধার্য্য হলে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার জনাকীর্ণ আদালতে আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। আসামী পূর্ব থেকেই জেল হাজতে থাকায় তাকে সাজা পরোয়ানা পড়ে শুনানো হয়। জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক। আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট মোঃ মামুনুর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন।
অপরদিকে- ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট নওগাঁ সদর উপজেলার চকচাঁপাই গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে সুমন হোসেন জোর করে মাদ্রসার ছাত্রী বার বছরের নাবালিকা শিশুকে সিএনজি যোগে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২০ আগস্ট নাবালিকার বড় ভাই থানায় মামলা করলে থানা কর্তৃপক্ষ ভিকটিমকে উদ্ধার করে তার ভাইয়ের জিম্মায় দিয়ে দেয়। তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে জনাকীর্ণ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মেহেদী হাসান তালুকদার আসামী সুমন হোসেনকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড কারাদন্ড প্রদান করেন। পূর্ব থেকেই আসাম জেল হাজতে থাকায় সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট আবু জাইদ মোঃ রফিকুল আলম মামলা পরিচালনা করেন।