নিয়ামতপুর(নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর নিয়ামতপুরে এক চোখের গরুর বাছুর জন্ম নেওয়ার ২ ঘন্টার মধ্যে মারা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের কুমরইল গ্রামের হিন্দু পাড়ায়। গত সোমবার দুপুরে শোবা রানীর পালিত গাভীর এক চোখা বাচ্চা হয়। বাচ্চা হওয়ার পরপরই এলাকায় হৈচৈ পড়ে যায়। এক চোখের গরু দেখতে শোবা রানীর বাড়িতে ভিড় করে শত শত মানুষ। কিন্তু ঘন্টা দুয়ের মধ্যে বাচ্চাটির মৃত্যু হয়। শোবা রানী কুমরইল গ্রামের মৃত নিশীরাজের স্ত্রী।
কুমরইল গ্রামের আরিফ হোসেন বলেন, সত্যি এটা অবাক করার মতোই বিষয়। শোবা রানীর বাড়িতে গিয়ে দেখে আমি খুব অবাক হয়েছি। এর আগে এ ধরনের ঘটনা এ এলাকায় কখনো ঘটেনি। বাচ্চাটি দেখতেও খুব সুন্দর ছিল।
একই গ্রামের মদন কুমার বলেন, গরুর বাচ্চাটি হওয়ার পরপরই আমাকে খবর দিলে সেখানে গিয়ে দেখি সদ্য জন্ম নেয়া বেটা বাচ্চাটির কপালের ওপর একটিমাত্র চোখ। নাক নেই, মুখ নেই। বাচ্চাটি মারা যাওয়ায় পরিবারটির মাঝে হতাশা কাজ করছে। কেননা এরা নিতান্তই হতদরিদ্র। একটি গাভী লালনপালন করে। এছাড়া শেবা রানীর ছোট এক ছেলে ও ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে। শেবা মানুষের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান।
শেবা রানীর মেয়ে সোনালী বলেন, স্কুল থেকে ফিরে এসেই গরুর যত্ন নেই। ঘাস কেটে দিতে হয়, পানি খাওয়াতে হয়। এত কিছু করার পরও বাচ্চাটি মারা যাওয়ায় খুব খারাপ লাগছে।
শেবা রানী কান্নাভরা কন্ঠে প্রতিবেদককে বলেন, স্বামী মারা যাবার পর থেকেই খুব কষ্ট করে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছি। মানুষের বাড়ি ও ক্ষেতে কাজ করে গাভিটি কিনেছি। অনেক আশায় ছিলাম বাচ্চা হলে সেখান থেকে দুধ বিক্রি হলে কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে। কিন্তু কপালে না থাকলে আশা করে কি করবিন বাপু।
উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ইয়ামিন আলী বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সাধারণত হরমোনের সমস্যার কারনে এ ধরনের বাচ্চা হতে পারে। তবে অনেক সময় গাভী গর্ভাবস্থায় ইউরিয়া জাতীয় কোন কিছু খেয়ে থাকলেও এ ধরনের সমস্যা দেখা যায়।