পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিরাপত্তায় ৪ আনসার সদস্য নিযুক্ত


ইমদাদুল হক,পাইকগাছা, খুলনা: পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সার্বক্ষনিক শারীরিক ও বাসভবনের নিরাপত্তায় ৪ জন সশস্ত্র আনসার সদস্য নিযুক্ত করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টাই আনসার সদস্যরা বাসভবন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, এমনকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।জনস্বার্থে সরকার আইন করে।

 

আর এই আইন জনগণ যখন লঙ্ঘন করে তখন আইন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হয় সরকারি কর্মকর্তাদের। বিশেষ করে উপজেলা পর্যায়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাদ্যে ভেজাল, পণ্য মজুদ করে সংকট সৃষ্টি, অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয়, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়, লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করা সহ ভোক্তা অধিকারের মত জনগুরুত্বপূর্ণ আইন বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে।

 

উপজেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চ এ কর্মকর্তার দায়িত্বের নির্দিষ্ট কোন পরিধি নেই বললেই চলে। সরকারি সব ধরণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে। কখনো তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে গিয়ে বিধি অনুযায়ী কাউকে জরিমানা, কাউকে আবার সাজা প্রদান করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেন। অনেক সময় টেন্ডারের ক্ষেত্রে অন্যায় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় টেন্ডারবাজীদের কাছে অপমান অপদস্ত হতে হয় ইউএনও’কে।

 

কখনো আবার কোটি টাকার সরকারি সম্পদ উদ্ধার করতে গিয়ে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের কাছে চাপের মুখে পড়তে হয় উপজেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তাকে। সরকারি সিদ্ধান্ত ও আইন বাস্তবায়নকারী এ কর্মকর্তার নিরাপত্তার জন্য ইতোপূর্বে ছিলো না বিশেষ কোন ব্যবস্থা। গত ২ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের বাসভবনে ঢুকে তার ওপর বর্বোরচিত হামলার ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে চলে আসে।

 

ঘটনারপর সরকার উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিরাপত্তায় আনসার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারি এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ৪ সেপ্টেম্বর পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সার্বক্ষনিক শারীরিক ও বাসভবনের নিরাপত্তায় ৪ জন সশস্ত্র আনসার সদস্য নিযুক্ত করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টাই আনসার সদস্যরা বাসভবন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, এমনকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। নিরাপত্তায় বিশেষ এ ব্যবস্থার ফলে এখন অনেকটাই স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এখন আর নেই তেমন কোন উদ্বেগ কিংবা উৎকণ্ঠা।

 

বিশেষ এ নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ইউএনও এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সরকারি অনেক কঠিন কঠিন সিদ্ধান্ত ও আইন বাস্তবায়ন করতে হয় আমাদের। অনেক সময় গভীর রাত পর্যন্ত অফিসে কাজ করতে হয়। সরকারি দায়িত্ব শেষ করতে গিয়ে বাইরে অনেক সময় রাত হয়ে যায়। রাত করে বাসায় ফিরতে হয়। অনেকটাই নিরাপত্তা জনিত ঝুঁকির মধ্যে আমাদের কাজ করতে হতো। তবে নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা কখনো সরকারি দায়িত্বকে অবহেলা করিনি। নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছি। সম্প্রতি ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা অনেকটাই উদ্বিগ্ন ছিলাম।

 

এ ঘটনারপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নিরাপত্তায় সরকার আনসার সদস্য নিযুক্ত করেছেন যার অংশ হিসেবে আমার এখানেও ৪ জন আনসার সদস্যকে নিযুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে নিরাপত্তার বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে। এখন থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কার্যক্রম আরো অনেক বেশি গতিশীল হবে বলে মন্তব্য করেন ইউএনও খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।