পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর পুঠিয়ার নন্দপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ঈদগাঁ মাঠে নামজ শেষে বাকবিতর্কের পর ৪ টি বাড়ি ঘর ও ১ দোকানঘর ভাংচুর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এই হামলার ঘটনায় অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। সোমবার সকালে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তবে ঈদের দিনে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্ঠি হয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে বিএনপির নেতা অধ্যপক নজরুল ইসলাম মন্ডল এবং থানার এস আই আমিরুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোস, ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে। তবে বিষয়টি নিয়ে বসে সমধান করা হবে।
আহতরা হলেন- ফজলুর রহমান (৭০), হামিম (৩৩), হিমেল (১৮) ও সাব্বির আহমেদ (২১) কে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি। আর রকসি (৩৫), মকবুল ও জাকির হোসেন স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করে। তবে এদের মধ্যে ফজলুর রহমানের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আর হামিম, হিমেল ও সাব্বির প্রথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে নন্দনপুর স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এএসএম মনোয়ার হোসেন মিম ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছী ইউনিয়নের নন্দনপুর ঈদগাঁ মাঠে নামাজ শেষে নন্দনপুর স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এএসএম মনোয়ার হোসেন মিম বাড়ি ফেরার সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মার ভাতিজা ও ছেলেরা এসে আমাকে বলে তুই এই মাঠে নামাজ পড়তে এসেছিস কেন? এই মাঠ তোর বাপের বলে উত্তেজিত হয়ে উঠে। সে সময় এলাকার লোকজন তাদেরকে শান্ত করে বাড়ি চলে যেতে বলে। এরপরও তারা স্কুলের পার্শ্ব দিয়ে এস আবারও রাস্তা ঘিরাও করে। এ সময় স্থানীয়রা তাদেরকে শান্ত করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মার বাহিনীরা নন্দনপুর বাজারে সনির সিমেন্টের দোকানঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনার প্রায় ১ ঘন্টাপর এসে নন্দনপুর স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এএসএম মনোয়ার হোসেন মিমের বাড়ির বিভিন্ন দরজা জানালা চাইনিস কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় সাচ্চু এবং রানার দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। পরবতীতে মকবুলের বাড়িতে গিয়ে তার ৩ ছেলের ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরের ডয়ার থেকে নগত টাকা, স্বর্ণ অলঙ্কার ও মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ফজলুর রহমান (৭০) নামের বৃদ্ধকে মাঠে মধ্যে তারিয়ে মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মকবুলের ছেলের স্ত্রী নাসরিন বেগম জানান, জুম্মা বাহিনীর সন্ত্রাসীরা চাইনিস কুরাল সহ অস্ত্র হাতে এসে বাড়ি ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ভংচুর ও লুটপাট করে। আমার স্বামী ডুবাই প্রবাসী। সেখান থেকে ৮০ হাজার টাকা প্রেরণ করে। আমি গতকাল রবিবার ৪৮ হাজার টাকা তুলে এনে ঘরে রাখা ছিলো।
তুফানের ঘরে ২০ হাজার টাকা, এক জোড়া কানের স্বর্নের রিং এবং স্বর্নের চেন নিয়ে যায়।
বাবলুর গ্রামীন ব্যাংক এনজিও থেকে উত্তোলন করা ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এছাড়া সনির সিমেন্টের দোকানঘর ভাংচুর করে টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জুম্মা জানান, মিম স্কুলে ৮ মাস থেকে অনুপস্থিত। তারা আজকে ঈদগাঁ মাঠে নামাজ শেষে মোবাইলে ষ্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে তারা আওয়ামীলীগের সর্মথক সংঘ বন্ধ হয়ে আমাদের ছেলে আদনান, মুন্না এদের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে ছেলে পেলেরা তাদের দোকান ঘর ভাংচুর করে। তবে তাদের বাড়ি ঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা আমার জানা নাই। খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির নেতা এসে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে সমধানের ডেট করেছে। আগামী সপ্তাহে বসার কথা রয়েছে।
নন্দনপুর স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এএসএম মনোয়ার হোসেন মিম বলেন, আমাদের পরিবারের সাথে আওয়ামী লীগের কোন নেতা কর্মী নাই, ছিলো না। তবে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানাচ্ছি।
থানার অফিসার ইনচার্জ কবীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে থানার এস আই আমিরুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এই পর্যন্ত কোন পক্ষই থানায় এসে অভিযোগ বা মামলা করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।