পুঠিয়ায় জামায়াতের কর্মীর অত্যাচারে অতিষ্ট আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিবার


পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়ার পূর্ব বারইপাড়ায় অবস্থিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালুকদার গ্রাম। সেখানে একজন জামায়াতের কর্মী মাসুদ ও তার পরিবারের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে সেখানকার প্রায় একশত পরিবার বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করার হুমকি দেয় ও ঘর থেকে বের করে দেওয়ার আতংকে বসবাস করে সেখানকার সুবিধাভোগীরা। তাই প্রতিবাদ করার সাহস পায়না তারা। মাসুদের ভয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করা, ভোটার আই কার্ডে এর ঘরের জায়গার দলিলের কাগজপত্রের ফটোকপি দেওয়া। সত্য ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়া। অনিয়ম ও মিথ্যা ঘটনাকে সঠিক বলে প্রমাণ করার জন্য মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বর্তমানেও সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মদদে দাপটের সাথে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করে চলেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ইতিমধ্যে আঙ্গুরা নামের এক সুবিধা ভোগীকে মসজিদ ও মাদ্রাসা ঝাড়– দেওয়ার কাজ করতো। তার কাছে থেকে মসজিদ ও মাদ্রাসার চাবি কেড়ে নেয় মাসুদের স্ত্রী ও বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করেন।

পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে পীরগাছা বাজারের মধ্যে টুটুলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেন মাসুদের ভাই।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান করেন কয়েক ধাপে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার পুঠিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বারইপাড়া গ্রামে মুসাখাঁ নদীর র্তীরে গড়ে তোলা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প। বর্তমানে সেখানে প্রায় একশত পরিবার বসবাস করেন।

স্থানীয়রা এবং আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ক্ষমতার দাপটে আশ্রয়ন প্রকল্পের জামায়াতের কর্মী মাসুদকে মসজিদ, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী তৈরি করেন। মাসুদ প্রয়াত জমায়াতের নেতা মকছেদের প্রতিষ্ঠিত কান্দ্রা দাখিল মাদ্রাসায় চাকুরী করেন।

কে এই মাসুদুর রহমান ওরফে মাসুদ? বারইপাড়া গ্রামের তসির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে মাসুদ। জামায়াতের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় চাকুরী করার সুবাদে তিনি জামায়াতের কর্মী বলে জানাযায়। মাসুদের বাপ, দাদারা পারিবারিক সূত্রেই বিএনপির সর্মথক। তার ভাই প্রয়াত সালাম বিএনপির নেতা পরবর্তীতে তিনি দল পরিবর্তন করেন। বাবু ও মুর্শেদ তিন জন বিএনপির সংক্রিয় কর্মী। তার আরেক ভাই সাইফুল তার স্ত্রী অন্যত্র চাকুরী করায় তিনিও অন্যত্র থাকেন।

মাসুদ তৎকালীন রাজশাহী পূর্ব জেলা জামাতের আমির প্রয়াত মকছেদ মাষ্টারের ঘনিষ্ট লোক হওয়ার সুবাদে তিনি তার প্রতিষ্ঠিত কান্দ্রা দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক হিসেব নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বর্তমানেও তিনি মাদ্রাসায় কর্মরত আছেন।

৯ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের প্রবীন নেতা নজির উদ্দিন বাগু জানান, মাসুদ বিএনপি পরিবারের লোক। সে কখনও আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত ছিলো না।

পুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বর) মিলন জানান, সে কখনও আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত ছিলো না। মাসুদের পরিবারের সাবাই বিএনপি। আর জামাতের নেতার মাদ্রসায় চাকুরি করে এবং জামাতের সাথে জড়িত।

পুঠিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ খাঁন ঝন্টু জানান, মাসুদ পারিবারিক ভাবে বিএনপির পরিবারের সন্তান। তারা যে কয়জন ভাই আছে সবাই বিএনপির কর্মী সমর্থক। তবে তার ভাই সালাম পরবর্তীতে দল পরিবর্তন করেন। কিন্তু মাসুদ জামায়াতের সক্রিয় কর্মী হয়েও সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর প্রতিনিধি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পে মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক সহ সকল বিষয় দেখাশুনা ও তদারকী করতেন এবং করছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ ব্যাপারে হযরত আনাস (রা.) নূরানী এন্ড কিন্ডার গার্ডেনের প্রধান শিক্ষক মাসুদুর রহমান হুমকির সুরে বলেন, এই সব বাদ দেন। ঝমেলা করেন না।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, মাসুদ, মাদ্রাসা ও মসজিদের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম নূর হোসেন নির্ঝর জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।