প্লাবন শুভ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আমন ক্ষেতে আক্রমণ করেছে কারেন্ট পোকা নামে পরিচিত বাদামি গাছ ফড়িং (বিপিএইচ)। স্বপ্নের ফসলে পোকার আক্রমণে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। তবে ফসলের অবস্থা তেমন গুরুত্বর না বলে জানিয়েছে, উপজেলা কৃষি অধিদফতর।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষকরা সচেতন থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে ১৮ হাজার ২৭৫ হেক্টর। কিছু দিনের মধ্যেই পাকতে শুরু হবে সোনালী ধান। এসময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান ক্ষেতে আক্রমণ করেছে কারেন্ট পোকা নামে পরিচিত বাদামি গাছ ফড়িং (বিপিএইচ)। তবে এই পোকা ফসলের জন্য তেমন গুরুত্বর না বলে জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার বেতদীঘি ইউনিয়নের মহেশপুর, খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের হরহরিয়ারপাড়, দৌলতপুর ইউনিয়নের জয়নগর, পলিপাড়া এলাকায় দেখা যায়, মাঠভরা সবুজ আমন ধানের ক্ষেত। হাওয়ায় দোলা দিচ্ছে ধানের সবুজ শীষ। কিছুদিনের মধ্যেই পাক ধরবে ধানগুলোতে। সেই মুহুর্তেই দেখা দিয়েছে বাদামি গাছ ফড়িংয়ের (বিপিএইচ)। সফলের গোড়ায় আক্রমণ করছে পোকাগুলো। ফলে ওইসব সফল হলদে রঙে পরিণত হয়ে আসছে। এ দেখেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন ওইসব জমির কৃষকরা।
হড়হরিয়ারপাড় গ্রামের কৃষক আব্দুল ছালাম বলেন, আমার ৪০ শতক আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে। বাজার থেকে কিনে কীটনাশক প্রয়োগ করেছি। দেখা যাক কি হয়।
আরেক কৃষক বেলাল উদ্দিন বলেন, আমার আমন ক্ষেত দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে ধান পেকে গেছে কিন্তু কাছে গেলে দেখা যাচ্ছে, কারেন্ট পোকার আক্রমণ করেছে। তাই ধানের শীষ ও গাছ সম্পূর্ণ সোলালী রঙে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ধানের ভিতরে কোন দানা নেই। ধান চিপা হয়ে গেছে।
মহেশপুর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, কারেন্ট পোকা এক জমিতে আক্রমণ করলে তা খুব দ্রুত অন্যজমিতেও ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা কয়েকজন কৃষক কৃষি অধিদফতরের পরামর্শ নিয়ে পোকামুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, উপজেলার কিছু জমিতে কারেন্ট পোকা লাগলেও ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। কৃষকদের জমিতে গিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা। যেসব জমিতে অন্ধকারাচ্ছন্ন ও আলো-বাতাস কম থাকে সেসব জমিতেই এ পোকার উপদ্রব বেশি দেখা যায়। আবহাওয়া বিরূপ ধারণ করলে আমন ক্ষেতে পোকাসহ বিভিন্ন বালাই লাগতে পারে।
তবে আমরা এ ব্যাপারে কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদানসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাট-বাজারে সচেতনামূলক পথসভা করা হচ্ছে এবং লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হবে না।