দীপক সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুরে বিয়ে-সাদি সম্পন্ন পর ঘটকালির উপহার দেওয়ার কথা বলে এক বৃদ্ধ ঘটককে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে নির্মমভাবে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই ঘটক বর্তমানে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাতরাচ্ছে।
গত ১৫ জুন (রবিবার) সন্ধ্যায় শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুর গোয়ালপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। আহত ঘটকের নাম মজিবর শেখ (৬৫)। তার বাড়ি একই উপজেলার ওমরপাড়া গ্রামে এবং তিনি মৃত হোসেন আলী মুন্সীর ছেলে।
জানা যায়, মজিবর শেখ উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের সূত্রাপুরের জহুরুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (২১) ও শাজাহানপুর উপজেলার ঘাসুরিয়া গ্রামের মো. মুন্না(২৮)-এর বিয়ের ঘটকালি করেছিলেন। গত ৯ জুন (সোমবার) আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বরপক্ষ নববধূকে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যেই নবদম্পতির মধ্যে বনিবনার সমস্যা দেখা দেয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন কনের পরিবার।
বিয়ের কয়েকদিন পর ঘটক মজিবর শেখকে “উপহার হিসেবে একটি লুঙ্গি দেওয়া হবে” এই কথা বলে জহুরুল ইসলামের বাড়িতে তাকে ডেকে নেয় মেয়ে পক্ষ। এরপরই তাকে মারধর করা হয়।
মজিবর শেখ অভিযোগ করেন, তাকে রাস্তায় থেকে ডেকে এনে প্রথমে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। এরপর তার হাত বেঁধে একটি গাছের সাথে বেঁধে গরুর গোবর মাখানো স্যান্ডেল ও লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে— বিশেষ করে হাত, পা ও মাথায়— নির্মমভাবে প্রহার করা হয়। একটানা এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নির্যাতনের পর ছোট ভাই নজরুল শেখ খবর পেয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
প্রথমে তাকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও ১৭ জুন (মঙ্গলবার) উন্নত চিকিৎসার জন্য মজিবর শেখকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ ঘটনার পরদিন মজিবর শেখের ছোট ভাই নজরুল শেখ বাদী হয়ে জহুরুল ইসলামসহ চারজনের নামে শেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “বিয়ের পর থেকেই আমাদের মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন খারাপ আচরণ শুরু করে। অথচ ঘটক মজিবর শেখ আমাদের বলেছিলেন, ছেলের পরিবার ভালো। এই প্রতারণার কারণে রাগের বসে একটু শাসন করা হয়েছে।”
শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তোফাজ্জল হোসেন বিষয়টি তদন্ত করে জানান, তদন্ত চলছে এবং তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।