বগুড়ায় সওজের জায়গা দখলের অভিযোগ !


বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার নন্দীগ্রামে সড়ক ও জনপথের পরিত্যক্ত জায়গায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ক্ষমতাসীন আ.লীগের উপজেলা শাখার একটি অফিস থাকা সত্ত্বেও সরকারি জায়গায় গত কয়েকদিন ধরে টিনের ঘড় তৈরীও করছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতাকর্মীরা।

তবে জায়গার দখল নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে বলে দাবী স্থানীয় আ.লীগের। অন্যদিকে  জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সরকারি জায়গা উদ্ধারে ব্যবস্থা চেষ্টা করছে বলে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, বগুড়া- রাজশাহী মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজের সময় নন্দীগ্রাম বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন হাটখোলা-পূর্বপাড়া সড়কের মাথায় ব্রিজ এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলীর বাড়ির পূর্বপাশে মহাসড়কের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে জায়গাটির ভবিষ্যত প্রয়োজনহেতু উচ্ছেদের তিন মাস পার না হতেই ওই জায়গার দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী। শুধু তাই নয় যথারীতি ওই স্থানে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে বড় টিনের ঘর তৈরী করছে।

আর এসব ঘর তৈরীর কাজ দেখভাল করছে এমন অভিযোগ স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনন্দ কুমার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিরুল ইসলাম সহ উপজেলা আ.লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক, ফিরোজ কামাল ফারুক, সানোয়ার হোসেন মিলনের বিরুদ্ধে।

তবে ওইস্থানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের অবৈধভাবে ঘর নির্মাণের কারণে ব্যবসায়িভাবে ক্ষতিগ্রস্থের পথে বেশকিছু ছোট দোকানীরা। আ.লীগের দখল নেয়া জায়গায় তৈরীকৃত ঘরের পেছনে আটকা পড়ছে বেশ কয়েকটি বৈধ দোকান সহ বিপদের সন্মুখীন হতে বসেছে হাটবারের দোকানি গুলো। ফলে দলীয় অফিসের আড়ালে পড়া ছোট ছোট দোকানীরা ব্যবসায়িক ক্ষতি হবে মর্মে  প্রতিকার চেয়ে দলীয় নেতাদের কাছে অনুরোধ জানালেও আমলে নিচ্ছে না কতিপয় নেতাকর্মীরা।

স্থানীয়রা আরো জানান, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ গেট এলাকায় দলীয় একটি কার্যালয় রয়েছে। আর ওই কার্যালয়টি  প্রায় ১০ বছর পূর্বে একই দলের সাবেক সভাপতি মরহুম জাহেদুর রহমান তৈরী করে গেছেন। অথচ একটি কার্যালয় থাকার পরও সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় আরেকটি কার্যালয় নির্মাণ করার চেষ্টা কতটা যুক্তিযুক্ত। নাকি অন্যকোন অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দলীয়সভার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এহেন সরকারি জায়গা দখলের চেষ্টা। এ নিয়ে নানা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে দলীয় অনেক নেতাসহ সচেতন মহলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় নেতাকর্মী জানান, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নামে জায়গা দখল করার পরিকল্পনা করছেন কয়েকজন। হয়তো প্রথমে দলীয় সাইন বোর্ড লাগিয়ে জায়গা দখল করবে, পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে তা সরিয়ে ছোট ছোট ঘর তৈরী করে ভাড়া দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করবে। যেটাই করুক এতে করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনন্দ কুমার বলেন, সড়ক ও জনপথের পরিতাক্ত ওই জায়গায় দলীয় কার্যালয় করা হলেও কর্তৃপক্ষ যখনই চাইবে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হবে। তাছাড়া জায়গাটির জন্য  ২০ আগস্ট সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, আমাদের একটি দলীয় কার্যালয় রয়েছে এবং ওখানে বসেই নিয়মিত রাজনৈতিক কার্যক্রম করা হচ্ছে। ক’দিন আগে দলের ছোট পদে থাকা দু’জন আমার কাছে আসেন এবং সড়ক ও জনপথের জায়গায় আরেকটি দলীয় কার্যালয় করার কথা বলেন। তবে আমি এ বিষয়ে কিছু বলিনি। পরবর্তীতে জানতে পারলাম ওই জায়গায় দলীয় অফিস নির্মাণের কাজ চলছে। এ ব্যাপারে দলীয়সভায় বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বক্তব্য জানতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যদি সরকারি জায়গা বেদখলের চেষ্টা করে কেউ বা কোন গোষ্টি। তবে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমাদের জায়গা উদ্ধারে ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া ওই জায়গায় দলীয় কার্যালয়ের স্থাপনা নির্মাণের আগে কেউ অনুমতি চায়নি বলে দাবী করেন ওই কর্মকর্তা।