মনিরুল ইসলাম,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা সহ মাটির গুণগত মান ভালো হবার ফলে নওগাঁর সাপাহারে কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার আরেক নাম বরই চাষ। এ উপজেলা যখন আমের রাজধানী হিসেবে সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেছে ঠিক সে সময় অধিক লাভের আশায় স্থানীয় কৃষকেরা ঝুঁকে পড়েছেন বরই চাষে।
চলতি মৌসুমে ইতমধ্যেই নানা জাতের বরই সংগ্রহ ও বাজারজাত করণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাজারদর ভালো থাকার ফলে সন্তোষ প্রকাশ করছেন এলাকার বরই চাষীরা। স্বল্পমেয়াদে অধিক ফলন ও লাভবান হবার ফলে বরইচাষে আগ্রহের সীমা নেই এলাকার চাষীদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, চলতি বছরে এ উপজেলায় মোট ৫১ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের বরই। যারমধ্যে ১২ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে কাশ্মীরি ও ৩৯ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে বলসুন্দরী জাতের বরই। চলতি বছরে প্রতি হেক্টরে ৫ থেকে ৬ মেট্রিকটন বরই উৎপাদন হতে পারে।এছাড়াও এ অঞ্চলে কাশ্মিরী , বাউকূল, আপেল কূল, বলসুন্দরী জাতের বরইও চাষ হচ্ছে।
সবচেয়ে সুস্বাদু চাহিদা বেশি হবার ফলে এ উপজেলায় বলসুন্দরী জাতের বরই চাষ হচ্ছে বেশি। তিনি আরো জানান, আম চাষ ব্যাপক লাভজনক হলেও আম বাগান করার পর প্রায় দু বছর পর আম পাওয়া সম্ভব কিন্তু বরই স্বল্প সময়ে পাওয়া সম্ভব এবং এটি একটি লাভজনক চাষ বটে। অধিক লাভের আশায় কৃষকেরা বর্তমানে বরই চাষে ব্যাপক ভাবে ঝুঁকে পড়েছে।
ঠাঁঠাঁ এই বরেন্দ্র অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটির গুণগত মান ভালো হবার ফলে বরই চাষ কৃষকদের জন্য লাভ জনক ও অনুকূল। বর্তমান সময়ে অনেক চাষী আম বাগানের মধ্যেই বরই চাষ করছেন বলে জানান এলাকার চাষীরা। স্বল্পমাত্রার পরিচর্যায় সহজে বরই চাষ করা যায় বলছেন এলাকার অনেক বরই চাষী।
বরই চাষী সিরাজুল ইসলাম জানান, এ বছর প্রথম বরই বাগান করেছেন তিনি। আবহাওয়া ভালো হবার ফলে চলতি বছরে বরইয়ের উৎপাদন অনেক ভালো। বাজারে এ বছরে বলসুন্দরী জাতের বরই প্রতিমন বিক্রয় হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ শ’ টাকা। এরকম বাজার স্থিতিশীল থাকলে বরই চাষে অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব।
বরই চাষী ইমরান হোসেন জানান, তিনি একজন ফল চাষী । তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বরইবাগান দেখে এসে নিজেই বরইয়ের বাগান করার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে ৬৮ বিঘা বরইয়ের বাগান করেছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় বরই অধিক লাভজনক চাষ বলেও জানান তিনি।
বরই বাগানে তেমন কোন পরিচর্যা করতে হয়না। প্রথমে গাছ লাগানো এবং জমি তৈরীর পর কীটনাশ ও যৎসামান্য পরিচর্যা ছাড়া কঠিন কোন পরিচর্যা করতে হয়না বলছেন বাগান পরিচর্যাকারীরা।
তবে সবমিলিয়ে ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্রখ্যাত এ অঞ্চল বরই চাষে কৃষিখাতে একটি নতুন সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন এলাকার অভিজ্ঞমহল।