অক্সেফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের প্রথম লট ভারত থেকে আগামী ২৫-২৬ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউটের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন ২৫-২৬ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসবে। ভারত সরকার কিছু ভ্যাকসিন বাংলাদেশকে উপহারস্বরূপ দেবে। সেটাও আশা করছি, যেকোনও সময় চলে আসবে।’
মন্ত্রী জানান, এর পাশাপাশি যারা করোনার টিকা তৈরি করছে, যেমন রাশিয়া, সানোফি, মডার্না, ফাইজারের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। সেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান থেকেও বাংলাদেশে টিকা আসবে।
ভারত থেকে কী পরিমাণ টিকা আসছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ডা. জাহিদ বলেন, ‘ভারত কী পরিমাণ ভ্যাকসিন দিচ্ছে সেই সংখ্যাটা এখনই বলতে পারবো না। তবে সেটা বেশ ভালো পরিমাণ। অল্প সময়ের মধ্যে চলে আসবে। প্রথম লট পাওয়ার আগেই উপহারের ভ্যাকসিন চলে আসতে পারে।’
তিনি আশাপ্রকাশ করে বলেন, ‘করোনা মহামারিকে আমরা যেভাবে মোকাবিলা করেছি, ঠিক সেভাবেই করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগেও সফল হবো। ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য প্রায় ৪২ হাজার জনকে প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মাস্ক একটা কার্যকর ব্যবস্থা, এটা কেউ জানতো না। আমরা ক্যাম্পেইন করেছি, সার্ভিস পেতে হলে মাস্ক পরতে হবে। নো মাস্ক নো সার্ভিস- পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রস্তাব আনন্দের সঙ্গে অনুমোদন দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে প্রাইভেট সেক্টরও ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ চালু করেছে। যা খুবই কার্যকর হয়েছে।’
অক্সেফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানি মিলে করোনা ভাইরাসের যে টিকা তৈরি করছে, তার উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া।
গেল ৫ নভেম্বর ‘কোভিশিল্ড’ নামের ওই টিকার ৩ কোটি ডোজ কিনতে সেরামের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। এই ৩ কোটি ডোজ দেশের নাগরিকদের বিনামূল্যে প্রয়োগ করবে সরকার। গত ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর এ টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক জানান, বাংলাদেশে ভারত থেকে আনা প্রতি ডোজ টিকার ক্রয়মূল্য হবে ৪ ডলার (দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৪০ টাকা)। সব মিলিয়ে এ দাম পড়বে ৫ ডলার (দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৪২৫ টাকা)।
করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় চুক্তির ধারা অনুযায়ী, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ৬ মাসে বাংলাদেশকে ৩ কোটি টিকা দেয়ার কথা রয়েছে। প্রতিমাসে টিকা আসবে ৫০ লাখ করে। বাংলাদেশ সরকার জনগণকে বিনামূল্যে এ টিকা দেয়ার ঘোষণা আরও আগেই দিয়ে রেখেছে। এছাড়া বেক্সিমকো বেসরকারিভাবেও ৩০ লাখ টিকা আনবে, যার প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১ হাজার ২০০ টাকা।