বিএনপির কাছে ‘সহযোগিতা’ চাইলেন কাদের


দেশে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির সহযোগিতা চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাইলে সরকারকে সহযোগিতা করুন। একদিকে মুখে গণতন্ত্রের কথা বলবেন, অপরদিকে অগণতান্ত্রিক কাজ করবেন। তাতে করে গণতন্ত্রের শতফুল বিকশিত হওয়ার পথ বিঘ্নিত হবে।’

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির উদ্যাগে আয়োজিত “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রচার কৌশল” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কর্মশালায় যুক্ত হন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র এখনও বিকাশমান ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। অতীতে নানা ঘাত-প্রতিঘাতে শিশু গণতন্ত্র এগিয়ে যাওয়ার পথে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকলকে দলমত নির্বিশেষে দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা এগিয়ে নিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’

ঘটনাবহুল কথিত ‘ওয়ান ইলেভেন’র প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ ১/১১ এর স্মৃতি এখনও ভুলে যায়নি। তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে বিএনপি ২০০৬ সালের শেষ দিকে যেনতেন নির্বাচন দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছিলো। ক্ষমতা অব্যাহত রাখতে রাষ্ট্রপতিকে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব দেয়া হয়। ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার যুক্ত করে ক্ষমতায় টিকে থাকার অপপ্রয়াস চালায় বিএনপি।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ঘটে যাওয়া গণতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়ার পথে একটি বড় ক্ষত তৈরি করা হয়েছিলো। বিএনপি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে জনগণের ভোটাধিকার হরণের অপচেষ্টা এবং একগুঁয়েমির কারণে সৃষ্টি হয়েছিলো এক-এগারো। বাধাগ্রস্ত হয়েছিল গণতন্ত্রের চলমান ধারা।’

মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির সুফল মানুষ পাচ্ছে বলেই বারবার তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছে। তাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সরকারের উন্নয়ন কাজের প্রচার অব্যাহত রাখতে এক একজনকে হতে হবে সাহসী সৈনিক।’

মাঠের রাজনীতিতে সফলতা না পেয়ে একটি মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে বেছে নিয়েছে, এমন অভিযোগ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও অপপ্রচার বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া যাবে না। শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে যারা সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, তাদের প্রতিহতে সবাইকে সত্য প্রচারে গড়ে তুলতে হবে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, আর্থ-সামাজিকসহ প্রতিটি খাতে অর্জন করে চলছে ঈর্ষণীয় সাফল্য। এসব অর্জনের ধারাকে বর্ণিল করে তুলেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ছোঁয়া।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশের আইসিটি খাতে ইতোমধ্যেই ঘটেছে নীরব বিপ্লব। রাজধানী থেকে প্রত্যন্ত জনপদে আজ হাতের মুঠোয় বিশ্ব যোগাযোগের নেটওয়ার্ক।’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ডক্টর হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সিআরআই’র সদস্যগণ।