‘আগে প্রধানমন্ত্রীকে টিকা নিতে হবে’- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, ‘বিএনপি সরকারেও ব্যর্থ, রাজপথেও ব্যর্থ। করোনার টিকা নিয়ে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘করোনার টিকা আগে প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে’। মন্ত্রিসভার সদস্যগণ যখন টিকা গ্রহণ শুরু করলেন, তখন আবার তারা বলতে শুরু করেছেন, ‘শুধু সরকারি দল টিকা নেয়, বিরোধী দলকে দেয় না’।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঠিক পদক্ষেপের কারণেই দ্রুত দেশে টিকা এসেছে। ইতোমধ্যে ৫৪টি জেলায় টিকা পৌঁছে গেছে। আগামী ৭ তারিখ থেকে টিকা দান শুরু হবে।’
দুর্যোগ মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে ‘শিক্ষকের ভূমিকা’ পালন করছেন বলেও জানান শামীম।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) উদ্যোগে নসরুল হামিদ মিলনায়তনে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এনামুল হক শামীম বলেন, ‘জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন গত বছর বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এমন স্বীকৃতি দিয়েছেন। করোনাকালে বিশ্ব যখন হিমশিম তখন বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা এবং জীবন-জীবিকা সচল রাখতে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যার দুরদর্শী নেতৃত্বের কারণে একটি মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। সে কারণেই যথাযথই তিনি দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বে শিক্ষকের ভূমিকা পালন করছেন।’
‘বঙ্গবন্ধুকন্যাকে সাংবাদিকবান্ধব প্রধানমন্ত্রী’ উল্লেখ করে এনামুল হক শামীম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেও সাংবাদিকতা করতেন। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও সাংবাদিক বান্ধব প্রধানমন্ত্রী। সাংগঠনিক কল্যাণে তিনি সব সময় এগিয়ে এসেছেন। সাংবাদিকদের কল্যাণ ফান্ড, আবাসনের ব্যবস্থা, দুর্যোগকালীন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন। অসুস্থ সাংবাদিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। কে কোন দল করেন সেটা বিবেচনায় নেন না, যে কোন অসহায় সাংবাদিকদের পাশে দাড়ান। এই করোনাকালেও সাংবাদিকদের বিশেষ ভাতা দিয়েছেন। সাংবাদিকদের কল্যাণ ফান্ডে টাকা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণেই দেশে বেসরকারি খাতে টেলিভিশন ও পত্রিকা, রেডিও দিয়েছেন। এতে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আবার সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ডও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেয়া হয়েছে।’
উপমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হলে শক্তিশালী গণমাধ্যম দরকার। সরকার কোন ভুলত্রুটি করলে সেগুলো তুলে ধরুন। আবার সরকারের সাফল্যগুলোও জনগণকে জানান। সমালোচনার পাশাপাশি ভাল কাজগুলো তুলে ধরলে সবার উপকার হয়।’
‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বে রোল মডেল’ উল্লেখ করে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামীম বলেন, ‘চতুর্থবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টানা হ্যাট্রিক প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীতে কেউ নেই। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততায় সেরা, নেতৃত্বে সেরা, যোগ্যতায় সেরা, মানবিকতায় সেরা। তিনি সেরাদের সেরা প্রধানমন্ত্রী।’
নিজেকে সাংবাদিকদের বন্ধু জানিয়ে শামীম বলেন, ‘রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিক একে অপরের পরিপূরক। বিরোধী দলের রাজনীতির সময়ে অনেক সাংবাদিক বন্ধুর সহায়তা পেয়েছি। এখনও পাই। সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার সর্ম্পক ক্ষণিকের নয়, স্থায়ী। কারণ একজন রাজনীতিবিদের উত্থান-পতনে সাংবাদিকদের ভূমিকা থাকে।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি ওসমান গনি বাবুলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন- সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির উপদেষ্টা ডা. মনিলাল আইন লিটু, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল ও কল্যাণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।