নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার অন্ত্বসত্তা মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন ও ভ্রুণ হত্যা মামলার আসামীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়েছেন। মামলার ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও ছয় আসামীর কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছেন। জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিম আলী দেওয়ানের মেয়ে তাজনুভা তাজরীনের সঙ্গে নগরীর শিরোইল এলাকার আবেদ আলীর ছেলে আজাহার আলী আপেলের বিয়ে হয়। কিন্ত আপেল নেশা করে এসে বিভিন্ন সময়ে তাজরীনকে মারপিট করেন।
এরইমধ্যে নগদ ৪ চার লক্ষ টাকা যৌতুক নেয়ার পর আরো ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যৌতুক না পেয়ে এ বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ওই মুক্তিযোদ্ধার মেয়েকে হত্যা করতে উদ্যত হন আপেল ও তার বাড়ির লোকজন। একপর্যায়ে তাজরীনকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে তারাও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এর দুদিন পর স্ত্রীকে ডিভোর্স লেটার পাঠান তিনি। এরইমধ্যে তাজরীনের গর্ভে সন্তান আসে।
সুত্র জানায়, এ বছরের ১৬ মার্চ দুপুরে তাজরীনকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করেন তারা। ১৭ মার্চ তিনি ভর্তি হন হাসপাতালে। পরে বাচ্চাটি মারা যায়। এরপর ২১ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামী আজাহার আলী আপেলসহ ৬ জনকে আসামী করে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
সূত্র আরো জানায়, পুলিশ কাউকেই গ্রেপ্তার না করে উল্টো ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলে কালক্ষেপণ করে। পুলিশি সহায়তা না পেয়ে এবং আসামীরা উল্টো হুমকি ধামকি দিতে থাকায় গত ৩১ আগস্ট আদালতে ভ্রƒন হত্যা মামলা করেন তাজরীন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মতিনকে তদন্তের নির্দেশ দিলে তিনি ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
উল্টো পুলিশের ভাষ্য, আসামীরা দেশের বাইরে পলাতক রয়েছেন। তবে আসামীরা দেশেই রয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ ঘটনায় থানা পুলিশের সহায়তা না পেয়ে গত সোমবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহিম আলী দেওয়ানের মেয়ে তাজনুভা তাজরীন জানান, আপেল তার মা মোতাহারা বেগম জেনির ইন্ধনে আরো কয়েকজনকে বিয়ে করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে পুলিশও নানারকম নাটক সাজানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। আসামীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দ্রুত চার্জশিট দাখিল করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। কাগজপত্র না দেখে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।