রাণীনগরে গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টা! গ্রাম্য শালিসে ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ


নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে এক গৃহবধুকে (১৯) জোর পূর্বক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মিমাংসার নামে গ্রাম্য শালিসে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে গ্রামের মাতাব্বর প্রধানরা। ঘটনাটি নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুয়াতা কুঞ্জশাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন মল্লিকের ছেলে আব্দুল আলিম মল্লিক (৩০) গত বৃহস্পতিবার সকাল অনুমান দশটার দিকে এক গৃহবধুর বাড়িতে কিটনাশক ওষুধ স্প্রে মেশিন নেয়ার অযুহাতে প্রবেশ করে। এ সময় গৃহবধুর কাছে মেশিন চাইলে না দেয়ায় ফিরে আসে আলিম। এরপর আবারো কয়েক মিনিটের মাথায় ওই গৃহবধুর বাড়িতে ঢোকে কাঁথা শেলাইরত অবস্থায় একা পেয়ে ঝাপটে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

এ সময় গৃহবধু ধস্তা-ধস্থির একপর্যায়ে ছিটকে ফেলে দিয়ে বটি নিয়ে আলিমকে আক্রমন করতে গেলে দৌড়ে পালিয়ে যায় আলিম। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ওই গ্রামের সখিন উদ্দিনের বাড়ির খলিয়ানে গ্রাম্য শালিস বসে। শালিসে গৃহবধুর অভিযোগ প্রমাণিত হলে এবং আলিম স্বীকার করলেও মাতাব্বর প্রধানরা আলিমকে দিয়ে গৃহবধুর হাত ধরে ক্ষমা নিয়ে ঘটনাটি ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সুষ্ঠু বিচার না হওয়ায় গৃহবধু শালিস প্রত্যাখান করে চলে যায়।

ওই গৃহবধু জানান, আলিম আমাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। এ সময় আমি ফসকে গিয়ে বটি নিয়ে আক্রমন করলে আলিম দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসব ঘটনা বৈঠকে বিবরণ দিয়েছি এবং আলিম তা স্বীকারও করে নিয়েছে। এর পরেও মাতাব্বররা সুষ্ঠু বিচার না করে শুধু হাত ধরে মিমাংসা করে বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। গৃহবধুর শ্বশুর জানান, বিচার সন্তোষজনক না হওয়ায় আমরা তা প্রত্যাখান করে চলে এসেছি। তারা আরো জানান, সুষ্ঠু বিচার পেতে থানায় মামলা করবেন।

এ ব্যাপারে আলিমের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, বৈঠকে ছেলেকে চর-থাপ্পর মেরে গৃহবধুর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। তার পরেও তারা মানেনি।

শালিসের সভাপতি ফয়জুল ইসলাম বলেন, গৃহবধুর অভিযোগ আলিম স্বীকার করে নিলে হাত ধরে মিমাংসার চেষ্টা করেছি। রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল হক বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ জানায়নি বা অভিযোগ দেয়নি। মামলা দায়ের করলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।