রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: প্রায় দেড় লাখ টাকায় মোটরবাইকে ইয়াবা ঢুকিয়ে এক ইউপি সদস্যকে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনায় হোতা আটক জিজ্ঞাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে। এনএসআই’র ২ সোর্সকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। এর আগে ব্যাপক গণধোলাই দেয়া হয় তাদের। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রৌমারীগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নুরুন্নবী নামের এক যুবককে আটক করা হয়। পরে আটক করা হয় হাফিজুর নামের আরেক যুবককে। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এখনও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে রৌমারী থানার ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ জানিয়েছেন।
ফাঁসিয়ে দেয়া ওই ইউপি সদস্যের নাম রবিউল করিম। তিনি রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি বলেন, সিয়াম কাউন্টারের সামনে রাখা আমার মোটরবাইকের হ্যান্ডেলে ইয়াবা ঢুকিয়ে র্যাব দিয়ে আমাকে ধরিয়ে দেয়া হয় গত বছরের ১ নভেম্বর। প্রায় ৪০দিন পর আমি জামিনে মুক্তি পেয়েছি। এরপর থেকে খুঁজতে থাকি কে আমার মোটরবাইকে ইয়াবা দিলো। পরে জানতে পারি হাফিজুর ও নুরুন্নবীর নাম। তারা আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালুর নিকট ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দেয়ার এ নাটক তৈরি করে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা ১০ জন ইউপি সদস্যগণ আন্দোলন করে আসছি এবং বিভিন্ন অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি তা তদন্তাধীনে রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, নুরুন্নবী দীর্ঘদিন ধরে এনএসআই রৌমারী বিশেষ শাখার সোর্স হিসেবে কাজ করে আসছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে হুমকি, চাঁদাবাজি, নিরীহদের ফাঁসিয়ে দেয়াসহ এমন নানা অপকর্মের অভিযোগ ওঠে। এদিকে হাফিজুর রহমানও সাংবাদিক সেজে অনেক অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত নুরুন্নবী রৌমারী গ্রামের আলী হোসেন ওরফে আলী খলিফার ছেলে ও হাফিজুর রহমান দক্ষিণ বাউশমারী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।
এনএসআই’র এডি মোহসীন কবির বলেন, নুরুন্নবী আমাদের সোর্স নয়। সে কিছুদিন আমাদের কম্পিউটারে কাজ করেছিল মাত্র। সে ছিল র্যাবের সোর্স।
এদিকে জামালপুর র্যাব-১৪ এর কমান্ডার এএসপি সমীর সরকার বলেন, নুরুন্নবী নামে আমাদের কোনো সোর্স রৌমারীতে নেই। তাছাড়া সোর্সের নাম বলা আমাদের নিষেধ। তাই এ বিষয়ে কোনো কথা নয়।
ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ঘটনায় দায়ী করা ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু বলেন, আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে কিছু মানুষ। সত্য বলতে কি, আমি এসবের কিছুই জানি না।
রৌমারী থানার ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নুরুন্নবী ও হাফিজুরকে এখনও পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো মামলা হয়নি।