ফয়সাল আজম অপু : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে একটি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে ১৫ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (০২ অক্টোবর) গভীর রাতে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের সোনাপুর এলাকায় গোলাম মোস্তফা (৫০)র পুকুরে এ ঘটনা ঘটে। বিষ প্রয়োগের ফলে পুকুরের প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ মরে ভেসে উঠেছে।
পুকুরের মালিক ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা বলেন, এবার পুকুরে পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, পুঁটিসহ দেশীয় বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে কিছু দিনের মধ্যেই মাছগুলো বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠতো।
তিনি অভিযোগে আরও বলেন, আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার, আমি অবসর নেয়ার পর পুকুরে মাছ চাষ শুরু করি কিন্তু জমি সংক্রান্ত জেরে একই এলাকার আমার চাচাত ভাই আব্দুল মালেক (৫৬), পিতা-মৃত কুদ্দুস চৌধুরী, মোঃ নুরুল ইসলাম (৬৪), পিতা-মৃত ফরিজ উদ্দিন, মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৩৫), পিতা-মোঃ নুরুল ইসলাম, মোঃ রাকিমুদ্দিন (৫১),
পিতা-মৃত তোসলিম উদ্দিন, মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪৩), পিতা-মৃত নজরুল ইসলাম, মোঃ এনামুল হক রমিজ (৫৬), পিতা-মৃত তোসলিম উদ্দিন, সর্ব সাং-সোনাপুর, ওয়ার্ড নং-০২, ডাকঘর-সোনামসজিদ, ইউপি-শাহবাজপুর, থানা/উপজেলা- শিবগঞ্জ, জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ গণ আমার নিকটতম আত্মীয়। উল্লেখিত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ জমি/জমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমার সাথে বিরোধ করে আসছে। তফশীল ভুক্ত পুকুর আমাদের বহু তালের ভোগ দখলীয় সম্পত্তি। উক্ত পুকুরে আমরা বিভিন্ন জাতের মাছ চাষাবাদ করে ভোগ দখল করে আসছি।
উল্লেখিত আসামীগণের বিরুদ্ধে চলতি বছর এপ্রিল মাসে একই কায়দায় বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলেছিলো। আমাদের ভোগ দখলীয় পুকুরের ক্ষতি সাধন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করে আসছিলো। উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধীন রহিয়াছে। উল্লেখিত আসামীগণ বিজ্ঞ আদালত হইতে জামিনে মুক্তি পাইয়া আমাদের ভোগ দখলীয় পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারিয়া ফেলিবে বলে প্রকাশ্য হুমকি মূলক কথাবার্তা বলিয়া আসিতেছিল। এমতাবস্থায় গত ০২ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২ টার সময় উল্লেখিত আসামীগণ সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন আসামী আমাদের নিম্ন তফশীল ভুক্ত পুকুরে অনধিকার প্রবেশ করে পুকুরে কীট নাশক বিষ প্রয়োগ করে পুকুরে থাকা সমস্ত মাছ মারিয়া ফেলে।
আমি সহ আমার পরিবারের লোকজন ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে আমাদের ভোগ দখলীয় পুকুরে যাইতে থাকলে আসামীগণ আমাদেরকে দেখে দ্রুত ঘটনাস্থল হইতে পালাইয়া যায়। উল্লেখিত আসামীগণ আমাদের উক্ত পুকুরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মেরে ফেলে প্রায় ১৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধন করে। এতে আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল মালেক বলেন, মোস্তফা আমার চাচাত ভাই, পুকুরে বিষ দেয়ার বিষয়ে আমি কিংবা আমার কোনো লোক জড়িত নয়। আমি বর্তমানে পরিবার নিয়ে শিবগঞ্জ বাজারে ভাড়া থাকি। তাছাড়া পুকুর নিয়ে আমাদের সাথে পারিবারিক ঝামেলা আছে। ১৫ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। লোক মূখে শুনেছি মাত্র কয়েক মন মাছ মারা গেছে, তাই তদন্ত করে নিউজ করবেন।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে আমাদের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেছে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।