শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকের মুখে হাসি


নাজমুল হোসেন (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন আগাম সবজি চাষাবাদে ঝুকে পড়েছে কৃষকেরা। সবুজ সবজিতে এখন ভরে উঠেছে চরাঞ্চল। আগাম সবজি ইতিমধ্যেই স্থানীয় হাট-বাজারে উঠছে এবং দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর তীরবর্তী শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন লাভজনক সবজি চাষাবাদ করছে কৃষকেরা। চরাঞ্চল জুড়ে এসব সবজির মধ্যে রয়েছে, বেগুন, মুলা, পালংশাক, সীম, পটল, মিষ্টি কুমড়া, শসা, লাউ, টমেটো, কচু, লাল শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা ও বরবটি। এসব সবজি ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

এবার বন্যার পরও শীতকালীন আগাম সবজি চাষাবাদে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, প্রতি বছরই চরাঞ্চলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা আগাম এসব শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করে থাকে এবং লাভজনক এসব সবজি ইতিমধ্যেই হাট-বাজারে উঠছে। দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা খুশি। তবে কাজিপুর, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে এ সবজি বেশি চাষাবাদ হয়েছে এবং এ সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া বিশেষ করে চৌহালী উপজেলার সবজি গ্রাম নামে খ্যাত ধুপুলিয়া চর, বাউশা চর, উমারপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ চরভূমি সবজিতে এখন ভরে উঠেছে ।

মিনিদিয়া চরের কৃষক সামাদ মিয়া, ধুপুলিয়া গ্রামের মকছেদ আলী, সুলতান মিয়াসহ বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসা অনেক কৃষক বলেন, এবার শীতকালীন সবজির দাম অনেক বেশি। এতে এবার বন্যার ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা পুষিয়ে উঠছে। বন্যায় চরে পলি মাটি পড়ায় ক্ষেতের উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে সবজি ক্ষেতে সার অনেক কম দিতে হয়েছে। এজন্য সার প্রয়োগ ছাড়াই সবজির ফলন অনেক ভালো হয়েছে। বিগত বছরের মতো এবারো অনেকটা আগেই এ সবজি চাষাবাদ শুরু করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে মাত্র ৮/১০ হাজার টাকা খরচ করে লাখ টাকার সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের আরো সহযোগিতা পেলে এ লাভজনক চাষাবাদের চরাঞ্চলের কৃষকের ভাগ্যর উন্নয়ন ঘটবে।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, যমুনা নদীর তীরবর্তী সিরাজগঞ্জের ওই ৫ টি উপজেলার চরাঞ্চলে এবার ব্যাপক আগাম শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হয়েছে। এ সবজি চাষাবাদে তাদেরকে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এতে বিশেষ করে লাভবান হচ্ছে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা। বাজার ভালো থাকায় তাদের মুখে হাসিও ফুটেছে। এসব চাষাবাদে তাদেরকে স্থানীয় কৃষি বিভাগ পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।