গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, আজকে আমাদের একটামাত্র পথ হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। বিএনপি যেহেতু বড় দল তাই তাদেরকে উদার হতে হবে। অন্যান্য যারা আছেন তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। সরকারকে অগ্রাহ্য করে জনগণের কাছে যেতে হবে। তা না হলে কোনও লাভ নাই। স্বৈরাচার কখনও দয়া করে না, তাদেরকে বাধ্য করতে হবে।’
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে “দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন” আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও আমাদের জাতীয় স্বার্থ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ভারতের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তারা আমাদেরকে দয়া করেন নাই, তারা নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ভারতকে রক্ষার জন্য পঁচিশ বছর তাদের যে ব্যয় হতো, বাংলাদেশকে রক্ষার ফলে তারা এক বছরে তা উঠিয়ে নিয়েছেন। তারা আমাদেরকে কী দিয়েছে? আমাদের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, আমাদের মিথ্যাচারে রহিত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা কথায় কথায় বলি- ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দান করেছে, কিন্তু তার হিসাবটা পাওয়া যায় না। আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠান যারা পৃথিবীর সকল দেশের খোঁজ রাখেন, তারা বলেছে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল, এটা সঠিক কথা। তারা বিপদে আমাদেরকে আশ্রয় দিয়েছে। সেখানে তৎকালীন হিসাব অনুযায়ী, ভারতের ক্যাম্পে ৭ লাখ বাংলাদেশি লোক মারা গেছে। কিন্তু তারা কখনোই আমাদের সেই নামগুলো হস্তান্তর করেননি। প্রকৃতপক্ষে মারা গেছে তার চেয়ে অনেক বেশি, ভারতের মাটিতেই মারা গেছে প্রায় ২০ লাখ লোক। বেশিরভাগ মারা গেছেন শিশু-বৃদ্ধ। আর বাংলাদেশের মাটিতে মারা গেছে ২ লক্ষ ৬৯ হাজার। এটা কিন্তু বিএনপির হিসাব নয়, এটা বঙ্গবন্ধুর আমলের হিসাব।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবন দিয়েছেন আমরা তাদেরকে স্মরণ করি না। আমরা এক ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ দেশে পরিণত করেছি। ইতিহাস সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষ, নাম হয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের। স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী প্রতিটা মানুষের নাম বইতে আসা উচিত।’
সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক মহাপরিচালক মো. সাকিব আলী, মেজর (অব.) সরওয়ার, কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার ও ছাত্রদলের সাবেক নেত্রী আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।