তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর সরকারের নয় বরং বিএনপিরই পতন যাত্রা শুরু হবে এবং সহসাই তাদেরকে নির্বাচন পরবর্তী আন্দোলনের ঘোষণা দিতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কিছু দিন আগে বলেছিল অক্টোবর মাসে ফাইনাল খেলা। তারপর বললো, পুজার পরে। আবার বিএনপি মহাসচিব গতকাল বলেছিলেন, ২৮ তারিখ তারা সরকারের পতনের দাবিতে সমাবেশ করবেন আর আজকে নাকি তার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এখন মানুষ হাস্যরস করে বলে, এটা এবারের ২৮ তারিখ না কি আগামী বছরের না কি তার পরের বছরের। কারণ, গত প্রায় ১৫ বছর ধরে আমরা এই আন্দোলনের হুমকির মধ্যে আছি এবং বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপির কর্মীরা ছাড়া জনগণের সেখানে কোনো সম্পৃক্ততা নাই।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল সদস্যদের সন্তানদের মেধাবৃত্তি ও সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়ের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট বলরাম পোদ্দার এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। (বাসস)
এ সময় রাজনীতির শান্তিপূর্ণ চর্চার উদাহরণ তুলে ধরে গত বুধবার একই সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল ঢাকা শহরে দুটি বড় সমাবেশ হয়েছে, যার মাঝে দূরত্ব ছিলো মাত্র ২ কিলোমিটার। কিন্তু এ নিয়ে ঢাকা শহরে বিন্দুমাত্র কোনো গন্ডগোল হয়নি। রাজনীতির চর্চাটা এ রকমই হওয়া প্রয়োজন।’
ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হাসপাতালে হামলায় ৮শ’ মানুষ এবং শতশত শিশু মারা গেছে। তাদেরকে কবর দেওয়ার জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সমস্ত পৃথিবী প্রতিবাদ করেছে, ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গতকাল এবং এর আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম থেকেই এই হত্যাযজ্ঞ-যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।’
সমস্ত পৃথিবী এই বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়েছে শুধু বিএনপি এ প্রসঙ্গে একটি কথাও বলেনি উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তার মানেটা কি, তারা শুধু বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য আর তারেক রহমানের শাস্তি নিয়েই ব্যস্ত। আজকে যে পুরো পৃথিবী এর বিরুদ্ধে কথা বলছে সেটি তাদের কানে পৌঁছায় না। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, আশ্চর্যজনক এবং প্রতিবাদ না জানিয়ে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতা, এই শিশুহত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে, ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করেছে। এ ব্যাপারে কারা কি করছে সে নিয়ে জনগণকে জানানোর নৈতিক দায়িত্ব সাংবাদিকদের বলে আমি মনে করি।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে জামাত শ্লোগান দেয়, “আল্লাহর আইন চাই এবং সৎ লোকের শাসন চাই”। আর আজকে বিএনপির সাথে জামাতও নিশ্চুপ। অর্থাৎ এরা আসলে ধর্মটাকে ব্যবহার করে মানুষের কোমল হৃদয়ে আঘাত হানার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার সোপান হিসেবে। এরা হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ী। আজকে তাদের এই নিশ্চুপ থাকা ইসরাইলকে সমর্থন করার সামিল, যেখানে পুরো পৃথিবী এ নিয়ে কথা বলছে।’
অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে মেধাবৃত্তি ও সম্বর্ধনা স্মারক অর্পণকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘জীবনটাকে সংগ্রাম হিসেবে নিতে হবে, জীবন সংগ্রামে তোমরা অন্যদের পথ প্রদর্শক হবে। তোমরা নিজেরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবে এবং তোমাদের হাত ধরে দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবে।’