সাপাহারে পুকুর নিয়ে বিবাদ, বাড়িতে হামলা আহত-২


নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপারে একটি বিবাদমান পুকুর নিয়ে বিবাদের জেরে পুকুরে বিষ প্রয়োগ, বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২জন নারী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে সাপাহার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় সাপাহার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের ও হয়েছে।

জানাগেছে, সাপাহার কুচিন্দা গ্রামে খাইরুল ইসলামের সাথে শরিকানা পুকুর নিয়ে একই গ্রামের হাবিবুর রহমান ও আব্দুল কাদেরের সাথে বিবাদ চলে আসছিল। গত কয়েকদিন ঐ পুকুরের অন্যান্য মালিকরা পুকুরটিতে মাছ ছাড়ার জন্য পুকুরের গচ্ছিত টাকা চান অপর শরিক হাবিবুর রহমানের কাছে এতে বাধা হয়ে দাঁড়ান আব্দুল কাদের ও তার ছেলে হাবিবুর তারা কোনমতে পুকুরের টাকা দিতে চাননা। এ নিয়ে দেখা দেয় দ্বন্দ এরপর আব্দুল কাদের ও তার ছেলে হাবিবুর ঐ পুকুরটিতে গত বুধবার সকালে বিষ প্রয়োগ করে সকল পোনা মাছ নিধন করে।

ঘটনাটি জানাজানি হলে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টোগন্ডোগোল দেখা দেয়। এরপর গ্রামবাসী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে উভয় পক্ষকে শান্ত করে চলে যান। এর কিছু পর আব্দুল কাদের ও তার স্ত্রী হাবিবা খাতুন, ছেলে হাবিবুর রহমান, মেয়ে পারুল আক্তার, জাহাঙ্গীর, হাসানসহ ১০ থেকে ১২জন বেআইনী জনতা দলবন্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড়, লাঠিসোডা নিয়ে খাইরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়।

এবং বাসার দরজা ভেঙ্গে বাসায় অনাধিকার প্রবেশ করে খাইরুল ইসলামরে স্ত্রী পরিবানুকে বেধড়ক মারপিট শুরু করে। এসময় তার চিৎকারে পাশের বাড়ির রশিদুলের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে। এতে করে লোহার রডের আঘাতে দুজনের মাথা কেটে রক্তাত্ব হয়ে মারাত্বক জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তারা। এ সুযোগে খাইরুল ইসলামের বাড়িতে থানা নগদ আড়াই লক্ষটাকা ও দেঢ় ভরি স্বর্নালঙ্কার লুট করে পারিয়ে যান অভিযুক্তরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে সাপাহার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এঘটনায় খাইরুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে সাপাহার থানায় ৮জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১২/১৫জনকে আসামী করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযুক্তরা হলেন, সাপাহার উপজেলার কুচিন্দা গ্রামের মৃত. জহির মন্ডলের ছেলে আবদুল কাদের অরফে চুনকু(৬৫), আব্দুল কাদেরের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৫), আব্দুল কাদেরের স্ত্রী হাবিবা খাতুন (৪৫) আব্দুল কাদেরের মেয়ে পারুল (৩০) বিনোদপুর গ্রামরে ফজলুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৫) অর্জুনপুর ভাবুক গ্রামের মৃত. মসলেম উদ্দীন এর ছেলে আতাউর রহমান (৪৫) এবং বাসুল ডাঙ্গা গ্রামরে হাসান ও সাখওয়াত।

অভিযোগ কারী খাইরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় আব্দুল কাদেরের সাথে একটি পুকুর নিয়ে দ্বন্দ চলছিল। গত বুধবার সকালে কাদের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে সব পোনামাছ মেরে ফেলে। এনিয়ে একটু ঝামেলা হয় এবং সেটি মিটেও যায়। এরপর আমরা বাড়ি থেকে কাজে বাইরে চলে গেলে এ সুযোগে তারা ১৫-২০জন আমার বাড়িতে হামলা চালায়। আমার স্ত্রীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে আমার বাড়িতে থাকা ব্যবসার নগদ দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ও আড়াই ভরি সোনার চেন ও কানেরদুল লুট করে নিয়ে যায়। আমার স্ত্রীর মাথা ফাটিয়ে ফেলছে তারা সে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে । আমি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।

অভিযুক্ত আব্দুল কাদের হাবিবুর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুকুরে আমি বিষ দেইনি। ঐ পুকুরের চার-আনা জমির মালিক আমি ওরা পুকুরে মাছ ছাড়বে এ জন্য আমাকে জানায় আমার কাছে পুকুরের কিছু গচ্ছিত টাকা ছিল এটার ফেরতের ওরা চাপ দেয়। আমি বলি সবাই বসেন তারপর হিসাব নিকাশ করে টাকা দিব। কিন্তু তারা বসেও নি আমিও টাকা তাদেরকে দেইনি। তারা মাছ ছাড়ছে বিষয়টি নিয়ে একটা ঝামলে হয়।

তিনি আরও বলেন, খাইরুল ইসলামের বাড়িতে আমরা ঢুকিনি তাদের বাড়ির সামনে একটু কথা কাটাকাটি হয় এসময় আমি খাইরুলের স্ত্রী পরিবানুকে ধাক্কা দিলে সে পড়ে যায় সেখানে একটা টিন ছিল ওটা লেগে তার মাথা কেটে যায়। আমরা কাওকে আঘাত করিনি।

সাপাহার থানার ওসি তদন্ত রায়হান বলেন, কুচিন্দা গ্রামের মারামারির ঘটনায় একটা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম তদন্তের জন্য। এঘটনায় দু’জন মহিলা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। আসামীদের আটককের প্রক্রিয়া চালছে।