তানোরে ইসলামী ফাউন্ডেশনের যাকাত আদায়!


তানোর প্রতিনিধি: প্রথমে ঘোষনা ছিল শিক্ষক প্রতি ২ হাজার টাকা করে যাকাত দিতে হবে। কিন্তু উপজেলা সুপার ভাইজারের ক্ষমতার কারনে ৩ হাজার টাকা করে যাকাত দিতে বাধ্য  রাজশাহীর তানোর উপজেলার ইসলামী ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক প্রাক প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের। শুধু নিজেদের দিলে হবে না এলাকার ধনাঢ্যদের কাছ থেকে ও ফিতরা পর্যন্তও আদায়ের নির্দেশ দেন সুপার ভাইজার মাহমুদুল্লা। এতে করে শিক্ষক রা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। ফলে এসব নিয়ে সরেজমিনে তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, গত পবিত্র রমজান মাসে উপজেলায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের শিক্ষক ২ হাজার টাকা করে যাকাত দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা ও উপজেলা সুপারভাইজার। কিন্তু শিক্ষক রা ৫ মাস ধরে বেতন পাননি। কিন্তু যাকাতের ২ হাজার টাকা দিতেই হবে। যে দিবেনা তাকে চাকুরীচ্যুত করার হুমকিও দেন সুপার ভাইজার মাহমুদুল্লাহ।
বেশকিছু শিক্ষক রা জানান, রমজান মাসে এমন নির্দেশনা দেওয়ার পর আমরা সাব জানিয়ে দিয়েছিলাম বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস না পেলে যাকাতের টাকা দেওয়া অসম্ভব। মাসে ৫ হাজার টাকা করে বেতন। বকেয়া বেতন ও যত সামান্য বোনাস পাওয়ার পর ২ হাজারের পরিবর্তে ৩ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে। এমনকি টাকা নেওয়ার পর পছন্দের শিক্ষক কে রশিদ দিয়েছে, আবার কাউকে দেয়নি।
এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে জানান, সুপার ভাইজার মাহমুদুল্লাহ বলেছেন এসব নিয়ে সাংবাদিকরা ফোন দিয়েছে এবং খবরও প্রকাশ হয়েছে, যে শিক্ষক সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছে কোন সময় ধরা পড়লে চাকুরী হারাতে হবে এবং তার কপালে দু:খ্য আছে। সে ক্ষমতার প্রচুর দাপট দেখায়। শিক্ষক দের সাথে খারাপ আচরনও করেন।
উপজেলায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষক রয়েছে ১১০ জন। প্রতি শিক্ষক ৩ হাজার টাকা করে যাকাত দিতে হবে এবং সমাজে বিত্তবান দের কাছ থেকে যাকাত আদায় করতে হবে। শিক্ষক প্রতি ৫-৬ হাজার টাকা যাকাত আদায়ের টার্গেট দেওয়া হয়েছে। চাকুরী হারানোর ভয়ে সবাই ৩ হাজার টাকা করে যাকাত দিয়েছেন।যাকাতের টাকা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা মডেল লাইব্রেরিয়ান রুহুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, উপজেলা থেকে ৪ লাখ টাকা যাকাত তুলে সরকারী যাকাত ফান্ডে জমা দিতে হবে। কার নির্দেশে শিক্ষক প্রতি ২ হাজার টাকা যাকাত দিতে হবে জানতে চাইলে তিনি জানান, মন্ত্রনালয়ের চিঠি আছে, স্যারেরা নির্দেশ না দিলে কেন তুলব। শুধু তাই না ২৭ রমজানের মধ্যে টাকা জমা করতে হবে।
উপজেলা সুপার ভাইজার মাহমুদুল্লাহ বলেন, সরকারী নির্দেশে যাকাত আদায় করা হয়েছে, শুধু যাকাত না ফিতরাও তুলার  কথা বলেছি।
জেলা সুপারভাইজার, হুমায়ন জানান,শিক্ষক দের এভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তাদেরকে সমাজে যারা যাকাত দেয় তাদের কাছ থেকে তুলতে বলা হয়েছে। উপজেলা সুপার ভাইজার ফিতরা তোলার কথাও বলেছেন এটা কি এভাবে তোলা যায় জানতে চাইলে তিনি জানান, এটা সম্পূর্ণ বাড়তি কথা।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ এপ্রিল তানোরে শিক্ষক প্রতি ২ হাজার টাকা যাকাত আদায়ে চাপ শিরোনামে দৈনিক আমাদের রাজশাহী পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।