তানোরে সরকারি গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ নেই কৃষকদের


সাইদ সাজু, তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর উপজেলায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকেরা। ফলে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরুর দেড় মাসে মাত্র ৬৬ মেট্রিকটন ধান কেনা হয়েছে। গুদামে ধান বিক্রয়ের জন্য নির্বাচিত কৃষকদের সাথে যোগাযোগ করেও গুদামে ধান দিতে আগ্রহী করা যাচ্ছে না।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে তানোর উপজেলার ২টি গুদামে ১হাজার ৭শ’ মেট্রিকটন টন ধান ক্রয়ের বরাদ্ধ আসে। প্রান্তিক কৃষকরা যেন সরাসরি সরকারী গুদামে ধান বিক্রি করতে পারেন সেজন্য কার্ডধারী কৃষকদের মধ্যে থেকে উপজেলা প্রশাসন লটারির মাধ্যমে ১ হাজার ৭শ’ জন কৃষককে নির্বাচিত করা হয়। লটারীতে নির্বঅচিত হওয়া ১জন কৃষক সর্বচ্চো ১টন ধান গুদামে বিক্রয় করতে পারবেন।

২৬ টাকা কেজি হিসেবে (৪০ কেজিতে) ১মণ ধানের দাম ১ হাজার ৪০ টাকা এবং আর্দ্রতা ১৪ শতাংশ নিচে।কৃষকরা কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই প্রায় সরকারী গুদামের দামই বাইরে খোলা বাজারে বিক্রি করেই পাচ্ছেন। ফলে কৃষকরা সরকারী গুদামে দান বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। গত ১৫ এপ্রিল থেকে উপজেলায় সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। ২০ জুন শনিবার পর্যন্ত উপজেলার গোল্লাপাড়া সদর ও কাঁমারগা বাজার দুই সরকারি খাদ্যগুদামে মাত্র ৬৬ টন ধান কেনা হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধানের বর্তমান বাজারদর ও গুদামে ধান ক্রয়ের সরকার নির্ধারিত দাম প্রায় সমান। এ পরিস্থিতিতে গুদামে ধান বিক্রি করে কৃষকদের তেমন লাভ থাকবে না। তার ওপর কৃষকদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করা অনেক ঝক্কি-ঝামেলার। আর্দ্রতার কথা বলে প্রতি মণে এক-দুই কেজি করে বেশি ধান নেওয়া হয়। অনেক সময় ধান ফেরতও দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় বাজারে এসব ঝক্কি-ঝামেলা নেই। তানোর উপজেলার হাটবাজারে বর্তমানে প্রতি মণ ধান (৪০ কেজিতে ১মণ) ৯শ’ ৫০টাকা থেকে ১হাজার ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলাওল কবির বলেন, গত দেড় মাসে কম ধান সংগ্রহের একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে বর্তমান বাজারদর ও সরকারি দাম প্রায় সমান। এবার ধান কাটা শুরু হয়েছে কিছুটা পরে। এ কারণে কৃষকেরা সরকারি গুদামে ধান দিতে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্ধে রয়েছেন। তবে ধান সংগ্রহের এখনো বেশ সময় রয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করা হবে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত সব কৃষক গুদামে ধান দেবেন এবং সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হবে।