পুঠিয়ার জিউপাড়া ইউপিতে এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত টাকার সেলাই মেশিন বিতরণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ


পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়ায় জিউপাড়া ইউনিয়নের এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত টাকা নয় ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। পুঠিয়া উপজেলার ৬ নং জিউপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে। তবে এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত টাকার বাস্তবায়নকৃত প্রকল্প তদারকির অভাবে অনিয়ম ও দূর্নীত আখড়ায় পরিণত হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নাম মাত্র কাজ করে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ রয়েছে। তবে ৬ নং জিউপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার তাদের ইচ্ছে মত বড় লোক এবং বিদেশে থাকে এমন পরিবারের নিকট থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে তাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করেছে। এই বিষয় গুলো দেখার যেন কেউ নাই।

জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার ৬ নং জিউপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের এলজিএসপি’র বরাদ্দকৃত টাকায় ৪ টি প্রকল্পের কাজ করেছে। এর মধ্যে দুইটি এলজিএসপি এবং ৪ নং ৮ নং দুইটি ওয়ার্ডে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সান্টু হতদরিদ্রদের মাঝে সেলাই মেশিন বিরতণ এর জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ পান। সেই টাকায় তিনি ১৯ টি বাটারফ্লাই মেশিন বিতরণ করেন। মেম্বারের হিসাবে এক একটি সেলাই মেশিনের মূল্য ১০ হাজার ৫২৬ টাকা।

ঘটনাস্থল চকপালাশি গ্রামে গিয়ে জানাগেছে, সুবিধাভোগীদের নিকট থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে ৫ হাজার ৭ শত টাকা মূল্যের সেলাই মেশিন তাদেরকে দেওয়া হয়েছে। সুবিধাভোগীরা জানান, সেলাই মেশিন গুলো নষ্ট। সেলাই করতে গেলে বাকা হয়ে যায়। মেকাররা বলেছে, মেশিন সার্ভিসিং করতে হবে। মেম্বার ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদেরকে সেলাই মেশিন দিয়েছে বলে জানান সুবিধাভোগী।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, চেয়ারম্যান মেম্বাররা তাদের ইচ্ছে মত বড় লোক মানুষদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে শুধু তাদের গ্রামের লোকদের মাঝে সেই সেলাই মেশিনগুলো দেয়। কিন্তু অন্য কোন গ্রামের দরিদ্র মানুষরা পায়না। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান তারা।

সেলাই মেশিন বিক্রেতা জানান, বাটারফ্লাই জেএ২-১ মডেলের সেলাই মেশিনের বর্তমান দাম ৫ হাজার ৭ শত টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে।

জিউপাড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সান্টু’র নিকট থেকে তালিকা চাইলে তা দিতে অপারগতা স্বীকার করেন। বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে রেজুলেশন জমা দিয়েছি। আর ১৯ টা মেশিন বিতরণ করেছি স্বচ্ছ ভাবে। কোন অনিয়ম নাই।

জিউপাড়া ইউনিয়নের সচিব মোঃ সাইদুল ইসলামের কাছে ৪ ও ৮ নং ওয়ার্ডের সেলাই মেশিন বিতরণের তালিকা চাইলে তিনি চেয়ারম্যান মোসাঃ হোসনেয়ারার নিকট থেকে শুনে এসে বলে চেয়ারম্যান সহি করার পরে দিবো। ৪নং ওয়ার্ডের রেজুলেশন হয়েছে কিন্তু ৮নং ওয়ার্ডের রেজুলেশন হাতে পাইনি। এই অজুহাতে সাংবাদিকদের তথ্য প্রদান থেকে বিরত থাকেন তিনি। ৪ নং ওয়ার্ডে হত দরিদ্র প্রশিক্ষিত মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন সরবরাহ বাবদ এলজিএসপি প্রজেক্টে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। সেই টাকা থেকে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৬৯ টাকা পেয়েছে। তবে অভিযোগের বিষয়টি শুনলাম। আমি সেই এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।

জিউপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হোসনেয়ারা জানান, টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে মেশিনের দাম বেশি ও ভ্যাট ট্যাক্স বিষয় রয়েছে। এই কারণে দাম বেশি। এ বিষয়ে সাংবাদিকের মাথা ঘামানোর কিছু নাই।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ জানান, বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।