পুঠিয়ায় আদালতের কাগজ জালিয়াতি করে ফসলী জমিতে পুকুর খননের অভিযোগ


পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর পুঠিয়ায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের কাগজ জালিয়াতি করে ফসলী জমিতে স্কেভিটর মেশিন দিয়ে পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টের কাগজ যাচাই বাছাই না করেই অজ্ঞাত কারণে সবাই নিরব ভূমিকা পালন করছে। অথচ পুকুর খনন শুরু করে প্রায় চার ধার বাধাঁ শেষের পথে।
জানা গেছে, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের মোঃ শামসুল হুদার ছেলে শামীম হোসেন বিলমাড়িয়া মাঠে একটি পুকুর খনন শেষ করে আবার একটি বাসুদেবপুরে দিনে-রাতে লুকচুরি করে পুকুর খনন করছে। এখানে প্রায় দেড় মাস থেকে পুকুর খনন শুরু করে প্রায় চার ধার বাধাঁ শেষের পথে। তবে দুই সাইডে কিছু অংশ বাকিঁ রয়েছে বলে জানাগেছে।
৩০ মে পুঠিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের আর্দেশের ভিত্তিতে পুকুর খনন বিষয়ে অবহিত করণ পত্র সূত্রে জানা গেছে, শামিম হোসেন তার নিজ জমি ও কিছু জমি লিজ গ্রহণ করে জমিতে পুকুর খননের উদ্দেশ্যে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট চলতি বছর মার্চ মাসে ১১ তারিখে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নং ৭৪৩ অফ ২০২০ আদেশে পুকুর খননের অনুমতি প্রাপ্ত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি পুকুর খনন করতে ইচ্ছুক। মৌজা বাসুদেবপুর জমির পরিমাণ ৪ একর উল্লেখ করেছেন। সেই কাগজের সাথে বিলমাড়িয়ার রিয়াজ উদ্দিন নামের একজনের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকটে করা মৌজা বা স্থান উল্লেখ না করা আবেদনের ফটোকপি এবং সুপ্রিম কোর্টের কিছু কাগজের ফটোকপি সংযুক্তি দেয়।
ইতিমধ্যে শামীম হোসেন গত ৩০ এপ্রিল ২০২০ তারিখে ব্যারিষ্ট্যার আবু বাক্কার সিদ্দিক রাজন এর মাধ্যেমে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকরী কমিশনার ভূমিকে উকিল নোর্টিশ প্রেরণ করে।
শামীম হোসেন জানান, আমার পুকুর খনন চলছে। আর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের ভিত্তিতে পুকুর খনন বিষয়ে অবহিত করণ পত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, থানার অফিসার ইনচার্জ, পুঠিয়া প্রেসক্লাব, পুঠিয়া উপজেলা প্রেসক্লাব সহ অন্যান্য সংগঠনকে দিচ্ছি।
ব্যারিষ্টার আবু বক্কর সিদ্দিক রাজন জানান, শামীম হোসেন মাননীয় সুপ্রিম কোর্টে আপিল ডিডিভিশনে আপিল করার কারণে বিলমাড়িয়া মাঠে ইতি মধ্যে পুকুর খনন সম্পন্ন করেছে। পরবর্তী সময়ে সে আবার বাসুদেবপুরে অপর একটি পুকুর খনন করছে। তার কোন অনুমতি নাই। সেটা যদি করে সে সুপ্রিম কোর্টের কাগজ জালিয়াতি করে করেছে। এ ব্যাপারে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম জানান, শামিম আমাদেরকে কোন কাগজ জমা দেয়নি। তাই তার কাগজের বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছাঃ রুমানা আফরোজ জানান, অবহিত করণ পত্র পাওয়ার পর আমি শামীম হোসেনকে অফিসে ডাকি। এরপর তিনি আসলে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে করা আরজি, তার রায় এবং কোন মৌজায় এবং খতিয়ানে অনুমতি পেয়েছেন তার কাগজ দেখান। তারপর সে কোন কাগজ দেখাতে পারেনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওলিউজ্জামান জানান, শামিম হোসেন ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকরী কমিশনার ভূমিকে উকিল নোর্টিশ দিয়েছে। আদালত সংক্রান্ত বিষয় থাকলে আমরা সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তবে তার আরজি’র কপি চেয়েছি। সেটা যাচাই বাছাই করেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।