সিংড়ায় নতুন গবাদী পশুর হাট, স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই! প্রশাসন নীরব


আরিফুল ইসলাম, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের সিংড়া উপজেলার ১০নং চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ভোলার উদ্যোগে জমে উঠেছে সাপ্তাহিক নতুন গবাদী পশুর হাট। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ উঠেছে। 

সচেতন মহল বলছেন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন নইলে রোধ করা সম্ভব হবে না করোনা সংক্রমণ। উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের বৃহত্তম ধান হাটি নামে পরিচিত জামতলী হাটে প্রতি শুক্রবার নতুন এই গবাদী পশুর হাট বসছে। শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের প্রথম দিন সরেজমিনে হাট ঘুরে দেখা যায় দুর দরান্ত থেকে অনেক ক্রেতা বিক্রেতা হাটে এসেছেন,কিন্তু সেখানে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের মুখে নেই মাস্ক।

হার্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সচেতন হতে বলছে না কাউকেই। হাটে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে প্রচুর ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা। এদিকে সিংড়ায় কোন সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। শেষ হতে নাটোরের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এইরকম ভাবে স্বাস্থ্যবিধি নামানোর মহোৎসব শুরু হলে করোনা সংক্রমণ কোথায় গিয়ে ঠেকবে তানিয়া আতঙ্কিত সচেতন মহল। নতুন হাট হিসাবে হাটুরে মানুষের মধ্যে একটা ভিন্ন মাত্রার উৎসাহ উদ্দিপনা দেখা গেলেওস্বাস্থ্যবিধি মারা নিয়ে কারো কোনো চিন্তা নেই। গা ঘেষাঘেষি করে চলছে কেনাবেচা হাঁকডাক দরদাম। নাটোর তেবাড়িয়া থেকে ৮ টি গরু নিয়ে আসা সেকেন্দার নামের এক ব্যবসায়ী মুখে মাস্ক নেই। 

তার কাছে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, নতুন হাটের কথা শুনে এসেছি। দাম দর হচ্ছে। সঠিক দাম হলে বিক্রয় করবো। তবে মুখে মাস্ক এর ব্যাপারে হাসি দিয়ে বলেন আমাদের গরিব মানুষের কিছু হবে না। শুধু সেকান্দার নন হাটে আসা অধিকাংশ মানুষেরই একই উত্তর। হাট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন। হাটে পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের তাড়াশ বগুড়া নওগাঁ বিভিন্ন জেলা থেকে গবাদি পশু এ হাটে উঠেছে। এসেছি সেখানকার ব্যবসায়ীরা। ফলে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সচেতন মহলের।

এ বিষয়ে সিংড়া মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, বর্তমান করোনা কালীন সময়েশুধু হাট বাজার নয় বাড়ি থেকে বের হলেই প্রত্যেকটা মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা তো আরো জরুরি বিষয়। কারণ হাটে-বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন উপস্থিত হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহ যা যা প্রয়োজন সবগুলো করা প্রয়োজন নইলে যে কোন সময় ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে। তিনি আরো জানান, এই বিষয়ে হাট কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষকে সচেতন করা সহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে। অনেক বড় এলাকার ফাঁকা ফাঁকা জায়গায জুড়ে হাটে পশু তুলতে হবে। নির্দিষ্ট করে দিতে হবে লোকসংখ্যা। 

স্বাস্থ্য সচেতন হতে মাইকিং করা যেতে পারে। তাছাড়া মুখে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে নইলে ভেঙে পড়তে পারে করোনা সংক্রমণ রোধ কার্যক্রম। এ বিষয়ে হাট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সেইসাথে প্রশাসনকে নিতে হবে উদ্যোগ। হাটোর ইজারদার মোঃ ওমর ফারুক বলেন, আমরা এই হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সব রকম সুবিধে দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রতি শুক্রবার নিয়মিত হাট বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী হাট কমিটিরি সিদ্ধান্ত নিয়ে সপ্তাহে ২ দিন হাট বসানো হবে বলে তিনি দাবি করেন। 

তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে তিনি কোনো কথা বলেননি। হাটের উদ্যোক্তা চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম ভোলা বলেন, যাতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা হয় এই জন্যই আমরা একটা হাটকে ভেঙে দুইটা হাটে রুপান্তরিত করেছি যাতে এলাকার মানুষ করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। আজকের হাটে ৮০ ভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই এবং গাদাগাদি করে গরু কেনাবেচা করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেহেতু আজকে প্রথম হাট তাই আমরা সকল বিষয়ে নজর দিতে পারেনি আগামী হাট থেকে আমরা মানুষের মুখে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করব। শুধু আশ্বাস নয় সচেতন মহল চান স্বাস্থ্যবিধি মানতে যা যা প্রয়োজন তা করবে হাট কর্তৃপক্ষ। 

এব্যাপারে হাটে প্রশাসনিক নজরদারি এমনকি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার দাবি তাদের। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মোবাইলে বার বার (০১৭৬২৬৯২১১৪) নম্বরে ফোন দিও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি ফোনকলটি ধরেননি।