৫০তম জন্মদিনে যে রোমাঞ্চের কথা জানালেন শচীন


শচীন টেন্ডুলকারের ৫০তম জন্মদিন আজ। ছবি : আইসিসি

কেটে হাফসেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন বহুবার। সেঞ্চুরিও ছুঁয়েছেন শতবার। এবার জীবনের হাফসেঞ্চুরি পূরণ করলেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার। আজ সোমবার ৫০তম জন্মদিন ভারতীয় লিটল মাস্টারের। বয়সের হাফসেঞ্চুরি ছোঁয়ার দিনে শুভেচ্ছায় ভাসছেন শচীন। তবে বিশেষ দিনকে ঘিরে তিনি ফিরে গেলেন অতীতেও। মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা স্মৃতি তুলে ধরে জানালেন, ক্রিকেট মাঠের রোমাঞ্চের কথা।

নিজের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে ভারতের স্পোর্টস্টারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জীবনের নানা দিক তুলে ধরলেন শচীন। সেই সঙ্গে জানালেন নিজের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার দিনটি নিয়ে।

সাক্ষাৎকারে শচীন বলেছেন, ‘ক্রিকেট মাঠ থেকে আমার বিদায়টা (আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে) ছিল দারুণ। আমার মনে হতো, শেষ ম্যাচের অভিজ্ঞতাটা কেমন হবে! কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই দিনটিতে যা হয়েছে, আমার কাছে তা বিশেষের চেয়েও অনেক বেশি কিছু। এ কারণে আসলে কোনোকিছু আমি মিস করি না। কারণ ক্রিকেটার হিসেবে মাঠ ছাড়ার শেষ দিনটির স্মৃতি আমাকে রোমাঞ্চিত করে।’

২০১৩ সালের নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন শচীন। ওই ম্যাচে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ইনিংস ও ১২৬ রানের ব্যবধানে জয় পায় ভারত। ব্যাট হাতে শচীন নিজেও ছিলেন উজ্জ্বল। মাত্র তিন দিনে শেষ হওয়া ম্যাচটিতে তিনি উপহার দেন ৭৪ রানের ইনিংস। যেটা ভারতের জার্সিতে শচীনের শেষ ইনিংস।

ওই স্মৃতি নিয়ে সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘ওই ম্যাচে যখন ওদের (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ৮ উইকেট পড়ে গেল, ৯ উইকেট পড়ে গেল, আমি আক্ষরিক অর্থেই নিজেকে বলছিলাম, ‘মাঠে আমার শেষ কয়েকটি মূহূর্ত এসব। আক্ষরিক অর্থেই সময়টা গুণতে শুরু করছিলাম আমি। নিজেকে বললাম, এরপর আর  কিছুই আগের মতো থাকবে না। আমি আর সক্রিয় ক্রিকেটার থাকব না, সবসময়ই অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হবে আমাকে। এই মুহূর্তটা এতটা স্পেশাল ছিল যে, আমার কোনো আক্ষেপ নেই।’

শচীন আরও বলেছেন, ‘দেশের হয়ে খেলার সময়ের গর্ব, মাঠের ভেতরে চ্যালেঞ্জগুলো, টিম মিটিং, ড্রেসিং রুমের বন্ধুত্ব এবং অন্য সবকিছু সহজাতভাবেই হয়। তবে কিছুই স্থায়ী নয়। দলে থাকার সময় এসব হয়ই। সম্প্রতি আমরা গোটা দুই রোড সেফটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট (সাবেকদের আসর) খেলেছি। আবার মাঠে ফেরা ও খেলতে পারা ছিল দারুণ অভিজ্ঞতা।’

১৯৭৩ সালের ২৪ এপ্রিল মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন শচীন। তার বাবা রমেশ টেন্ডুলকার ছিলেন প্রখ্যাত মারাঠি ঔপন্যাসিক। লিজেন্ডারি কণ্ঠশিল্পী শচীন দেব বর্মনের ভক্ত ছিলেন। তারই নাম অনুকরণ করে রাখেন সন্তানের নাম।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬ বছর বয়সে অভিষেক হয় শচীনের। এরপর ক্রিকেটে দুহাত ভরে অর্জন করেছেন শচীন। গড়েছেন শত শত রেকর্ড। দুই যুগেরও বেশি সময় বাইশ গজে দাপট দেখি ২০১৩ সালে বিদায় বলে দেন।

ক্যারিয়ারে ঠিক ২০০টি টেস্ট খেলে থামেন শচীন। সাদা পোশাকে করেন ১৫ হাজার ৯২১ রান। যেখানে সেঞ্চুরি ছিল ৫১টি আর হাফসেঞ্চুরি ৬৮টি। ওয়ানডেতে শচীন খেলেন ৪৬৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ৫৯টি সেঞ্চুরিতে রান করেন ১৮ হাজার ৪২৬। হাফসেঞ্চুরি করেন ৯৬টি। ২৪ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৬৬৪ ম্যাচ খেলে করেছেন মোট ৩৪৩৫৭ রান করেছেন ভারতের এই ব্যাটিং গ্রেট।