এটা এরশাদ-আইয়ুব আমল নয়, আন্দোলন করলে সরে যাবে : মির্জা ফখরুল


বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব অনেক কথা বলেন। তবে তাঁর একটা কথার উত্তর না দিলে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি বলেছেন, জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র ছিল নাকি তামাশা। আরে, আপনাদের জন্মই তো ওই বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে। ১৯৭৫ সালে আপনাদের নেতা এবং আপনারা বাকশাল করে নিজেদেরকে নাই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আমরা বাকশাল, আওয়ামী লীগ নাই। পরে যখন জিয়াউর রহমান সাহেব আপনাদের সুযোগ দিলো আপনারা নিবন্ধন করেছেন। জিয়াউর রহমান আপনাদের আবার নিয়ে এসেছেন ওই বহুদলীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে। এখন আপনারা বলেন তামাশা!’

মির্জা ফখরুল দলীয় নেতাকর্মীদের বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই দানব কিন্তু ছোটখাটো দানব নয়, ভয়াবহ দানব-ফ্যাসিস্ট। পৃথিবীর কোনো দেশে ফ্যাসিস্টদের সরানো এত সহজে সম্ভব হয় না। এটা এরশাদ নয়, আইয়ুব খান নয় যে রাস্তায় আন্দোলন করবেন আর সরে যাবে। একটা শিক্ষিত বাহিনী ছাড়া কখনও যুদ্ধে জয় করা যায় না।’

 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

 

বিএনপির মহাসচিব এ সময় জাসদনেতা হাসানুল হক ইনুর সমালোচনা করে বলেন, ‘তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে অস্ত্র হাতে ‍তুলে নিয়েছিলেন। গণবাহিনী তৈরি করেছিলেন। আওয়ামী লীগের অনেককে হত্যা করেছেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। কালের চক্রে ওই হাসানুল হক ইনু আওয়ামী লীগের মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলেন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলেন।’

 

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘শক্তি নিয়ে এগোতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা গণতন্ত্র ফেরত চাই। আমরা ভোটের অধিকার চাই, ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। শক্ত হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আমরা জনগণকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে আসি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি। দাবি একটাই। চলে যাও, চলে যাও। রেহাই দাও বাংলাদেশকে। কথা পরিষ্কার, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে- নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। তা না হলে এই বাংলাদেশের মানুষ জানে কিভাবে তাদের অধিকার আদায় করতে হয়’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।

 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব প্রমুখ।