দীপক কুমার সরকার, বগুড়া থেকে : বগুড়ার শেরপুরে করতোয়া নদীতে ভেকু মেশিন চালিয়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে আসছিল এলাকার এক প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়ী। নদীর বৃন্দাবনপাড়া অংশে মাটি ও বালু উত্তোলনের কারণে বিপ্লব প্রামাণিক নামের এক ব্যক্তিকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে ভ্রাম্যমান আদালত। সে উপজেলা গাড়িদহ ইউনিয়নের রামেশ^রপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ১১টার দিকে এ ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালায় উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এসএম রেজাউল করিম। পরদিন বুধবার (১২মার্চ) কারাদন্ডপ্রাপ্ত বিপ্লব প্রামাণিককে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানা সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, শেরপুর পৌর শহরের গোশাইপাড়া এলাকাস্থ উপজেলা ভূমি অফিসের পাশেই প্রবাহমান করতোয়া নদী। নদীর বৃন্দাবনপাড়া সংলগ্ন(পরিত্যক্ত) অংশ থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে আসছিল জনৈক আলহাজ¦ ইছাহাক আলী নামের প্রভাবশালী এক মাটি ব্যবসায়ী। সে শহরের একই এলাকার বাসিন্দা এবং বর্তমানে উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত।
মাটি ব্যবসায়ী ইছাহাক আলী গোশাইপাড়া-বৃন্দাবনপাড়া অংশে এ সময়ে প্রবাহমান (বর্তমানে পরিত্যক্ত) ওই করতোয়া নদীর তলদেশ সমান উত্তর পাশের্^ জাগয়া বলে নিজের দাবী করা প্রায় ৪/৫ বিঘা জমি ভরাট করছিল। এতে তিনি অবৈধভাবে কখনও কয়েকজন শ্রমিক কোদাল ও ট্রলি ব্যবহার, আবার কখনও ভেকু মেশিন ও ড্রাম ট্রাক ব্যবহার করে বেশ কয়েকদিন করে মাটি উত্তোলন করে আসছিল। প্রায় গত ৭/৮ দিন ধরে অবৈধভাবে করতোয়া নদী থেকে মাটি উত্তোলনের কাজ প্রশাসনের নজরে আসে। এক পর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১২ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে শেরপুর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস,এম রেজাউল করিম ও থানা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটি উত্তোলনের কাজে জড়িত কয়েকজন দ্রুত পলায়ন করে। এসময় ভেকু চালক বিপ্লব প্রামাণিক কে হাতেনাতে আটক করে পুলিশ। পরে ভ্রাম্যমান আদালত আটককৃত তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয় । এরপর অবৈধ মাটি উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের ৩ টি ব্যাটারী জব্দপূর্বক সরকারের অনুকুলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং নির্বাহী প্রকৌশলী, শেরপুর পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস এম রেজাউল করিম বলেন, এই করতোয়া নদীর সাথে শেরপুরের সকল জনসাধারণের স্বার্থ জড়িত। এই নদী অনিয়ন্ত্রিত খনন ও বালু উত্তোলন করা হলে আমরা সকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই যেকোন মূল্যে এটি আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে।
এছাড়াও বর্তমান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি জেলায় একটি করে নদী দখলমুক্ত করার লক্ষ্যে বর্তমানে করতোয়া নদীর অবৈধ দখল মুক্ত করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই অভিযানের প্রেক্ষিতে এই কর্মসূচী আরো বেগবান হবে।