রাবিতে কোটা সংস্কারের কমিটি গঠন


রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য, মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি ও অন্যান্য কোটা থাকার বিষয়ে পর্যালোচনায় একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “সম্প্রতি কোটা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। সে লক্ষ্যে কোটা থাকা-না থাকা নিয়ে সার্বিক পর্যালোচনার বিষয়ে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় রাবি ভর্তিতে কোটার পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। গত তিন বছরের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৬২১টি, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৫৩৭টি এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৫৩৪টি আসন বিভিন্ন কোটায় বরাদ্দ ছিল।
এদিকে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে চলছে তুমুল  আলোচনা-সমালোচনা। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে পোষ্য, মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি ও খেলোয়াড় কোটা বাতিলের জন্য আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ফজলে রাব্বি নামে একজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, “পোষ্য কোটার মাধ্যমে এটাকে পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়েছে। পোষ্য কোটায় ভর্তি, বাবার সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি এমন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বাতিল হোক।”
এ বিষয়ে আরেক শিক্ষার্থী রোখশাত জাহান বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনিরা কি অনগ্রসর? তারা কি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী? এছাড়া পোষ্য কোটা বা স্বজন কোটা সম্পূর্ণ অবৈধ একটি সুবিধা। অনতিবিলম্বে এসব কোটা বাতিল চাই। ”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার জানান, “পোষ্য কোটা কেন প্রয়োজন সেটার একটা যৌক্তিক কারণ দেখান। জুলাই বিপ্লবের পরেও যদি কোনো বিশেষ সুবিধাভোগী শ্রেণী চলে, তাহলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সবার আগে শহীদ জহিরুল ইসলাম, শহীদ সাকিব আনজুম, শহীদ আলী রায়হানের জীবন ফিরিয়ে দিয়ে পরে এই কোটার দাবি করবেন।”
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে কোটা কত শতাংশ থাকা উচিত, সংস্কার বা সংশোধন করা লাগবে কি না সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করার জন্যই একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে ৫-৭ জন রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই বিস্তারিত জানা যাবে।”
উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।