নিখোঁজের ৬ মাস পর মাটিতে পুঁতে রাখা  যুবকের মরদেহ উত্তোলন


সোহেল রানা, নাটোর প্রতিনিধি: ঢাকার একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তিতে নাটোরে মাটিতে পুঁতে রাখা রুবেল হোসেন নামে এক যুবকের মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার রুয়ের ভাগ গ্রামের আসামি তারেক রহমানের বাড়ির পেছন থেকে এই মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। রুবেল হোসেন নাটোর সদর উপজেলার রঘুনাথপুর আমহাটি এলাকার রুপিজ উদ্দিনের ছেলে।
নাটোর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, রুবেল হোসেন, তারেক রহমান এবং হৃদয় হোসেন তিন বন্ধু। গত বছরের ১১ নভেম্বর হৃদয় হোসেন এবং তারেক রহমান জানতে পারে রুবেল হোসেনের বাবা অনেক ধনি ব্যাক্তি। তাদের অনেক অর্থ ও সম্পদ রয়েছে। এরপরে তারা রুবেলকে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে বড় অংকের টাকা মুক্তিপন আদায় করার জন্য রুবেলকে ডেকে নিয়ে যায় তারেকের রুয়ের ভাগের বাড়ীতে। সেখানে হৃদয় হোসেন এবং তারেক রহমান দুজনে মিলে রুবেলকে ঘুমের ঔষধ খাওয়ানোর পর তাকে হত্যা করে। হত্যার পরে তারা রুবেলের মরদেহ তারেকের বাড়ির পেছনে মাটিতে পূতে রেখে ঢাকায় চলে যায়।
এরপরে তারেক এবং হৃদয় রুবেলের বাবাকে মোবাইল ফোনে রুবেলকে অপহরণের কথা জানায় এবং মুক্তিপণ দাবি করে। রুবেলের বাবা পর্যায়ক্রমে তাদের চল্লিশ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। এর পরেও রুবেলকে ফেরত না দেওয়ায় গত বছরের ৪ ডিসেম্বর রুবেলের বাবা বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি চলতি বছরে ১০ মে ডিবি পুলিশ তদন্তভার গ্রহণ করে।
তদন্ত চলাকালিন অবস্থায় ডিবি পুলিশ ঢাকার দক্ষিণখান থানায় অন্য একটি মামলায় গ্রেফতারকৃত তারেক এবং হৃদয়কে নাটোরে নিয়ে আসে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে তারেকের বাড়ীর পেছন থেকে পুঁতে রাখা রুবেলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।   হদয় হোসেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর বাজার এলাকার বাসিন্দা এবং  তারেক রহমান নাটোর সদর উপজেলার রুয়েরভাগ এলাকার বাসিন্দা।
এ ব্যাপারে নাটোর সদর সাকের্লের সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদা শারমিন নেলী জানান , ডিবি পুলিশের হাতে মামলাটির তদন্তভার যাওয়ার পর ডিবি পুলিশ ঢাকার দক্ষিণখান থানায় অন্য একটি মামলায় তারেক এবং হৃদয়কে গ্রেফতার করে। পরে নাটোর থেকে একটি টিম গিয়ে ঢাকা থেকে আটককৃত তারেক এবং হৃদয়কে নাটোরে নিয়ে আসে। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে তারেকের বাড়ীর পেছন থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।