‘প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করা জরুরি’


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করা এখন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য মানুষের নাম পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, টাকা খেয়ে খারাপ লোকের নাম কেন্দ্রে পাঠাবেন না। তিনি এসব অপকর্ম থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজ সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে প্রয়াত সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের  স্মরণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান।

‘জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করতে হবে, নিজের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নয়’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকেই ক্ষমতা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে যায়, যা মোটেই কাম্য নয়।’

ওবায়দুল কাদের ক্ষমতার অপব্যবহার না করতেও দলের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে দেন।

‘রাজনীতিতে ভালো মানুষদের সঙ্গে রাখার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খারাপ মানুষ দিয়ে রাজনীতি করলে দল নষ্ট হয়ে যাবে।

‘দুঃসময়ে বসন্তের কোকিলেরা দলে থাকবে না। ত্যাগীরাই সুখে-দুঃখে দলের পাশে থাকবে’, উল্লেখ করে সৎ ও ভালো মানুষদের দলে টানারও নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।

‘১৯৭৫-এর পর দেশে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু হয়েছিল, তার রেশ এখনও রয়ে গেছে’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিল, কে নেপথ্যে ছিল—সে ইতিহাস সবাই জানে, যা কখনও ভুলে যাওয়ার নয়।’

সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জিয়া যেমন ’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়ক ছিলেন, তেমনি ২১ আগস্টে তারেক রহমান ছিলেন মাস্টারমাইন্ড।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজও আমরা প্রতিহিংসার বৃত্ত থেকে বের হতে পারিনি। ’৭৫ ও ২১ আগস্টের ঘটনা পারস্পরিক সম্পর্কের দেয়াল আরও উঁচুতে নিয়ে গেছে’ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছিলেন। আর, বিএনপি এখনও তা অব্যাহত রেখেছে।’

‘গণতন্ত্রের যে কর্মসম্পর্ক, তা বিএনপি নষ্ট করে দিয়েছে’—এমনটা মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘একাধিক বারের একজন প্রধানমন্ত্রীর কয়টা জন্মদিন থাকতে পারে? এটা কি প্রতিহিংসা নয়?’

‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুভূতিতে খোঁচা দিতে খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালন করেন’ বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের।

‘প্রতিহিংসার রাজনীতিতে কীভাবে সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখব’ —প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের।

‘বর্তমানে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক কর্মসম্পর্কের বিষয়টি অনুপস্থিত, কিন্তু কেন’—এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করা আমাদের এখন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।’

ওবায়দুল কাদের প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপনকে একজন সফল রাজনীতিবিদ আখ্যায়িত করে বলেন, একজন নির্লোভ নিরহংকার নেতা ও জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ছিলেন স্বপন।

ওবায়দুল কাদের হাসিবুর রহমান স্বপনের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানান।

শাহজাদপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শোক সভায় সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী  সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম তালুকদার, সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, ডাক্তার হাবিবে মিল্লাত মুন্না, ডাক্তার আবদুল আজিজ, তানভীর ইমাম, আবদুল মমিন মণ্ডলসহ শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।