বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে পাবিপ্রবিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত 


পাবনা  প্রতিনিধি : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গত মঙ্গলবার বিকালে  এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
গ্যালারী-২ এ মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোঃ হাবিবুল্লাহ’র সভাপতিত্বে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এম আব্দুল আলীম। প্রবন্ধকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর মূল দর্শন ছিল বিশ্বশান্তি। চীন শান্তি সম্মেলন, ষ্টকহোমে বিশ্বশান্তি পরিষদের সম্মেলন, জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনসহ সর্বত্র শান্তির  আহবান জানাতেন ।
তিনি বিশ্বের শান্তিকামী নেতা হিসেবে সারা বিশ্বের নির্যাতিত  নিপীড়িত মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। এই শান্তিকামী নেতা পূর্ববঙ্গের শোষিত- বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বছরের পর বছর জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। তারপরও সহিংস কোন আন্দোলনের ডাক দেননি। সকলের প্রতি বন্ধুত্ব কারো প্রতি শত্রুতা নয় এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর সরকারের  পররাষ্ট্রনীতি।
পৃথিবীর যেখানেই মানবতা বিপন্ন হয়েছে, যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রগুলোর অস্ত্রের ঝনঝনানিতে মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে, তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শান্তির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। স্বাধীন দেশের দায়িত্ব নিয়েই শান্তির ডাক দিয়েছেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্খা এবং বিশ্বমানবের কল্যাণে তাঁর চিন্তাকর্ম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সারা ফেলে।
তার প্রেক্ষিতেই স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং বন্ধুত্বের হাত বাড়ায়। বঙ্গবন্ধুর জীবনব্যাপী সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ের কথা বিবেচনায় এনেই এ পদক প্রদান করা হয়। ১৯৭৩ সালের ২৩ মে পদক পরিয়ে বিশ্বশান্তি পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল রমেশ চন্দ্র বলেন,  বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলার নন, তিনি বিশ্বের এবং তিনি বিশ্ববন্ধু।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান বলেন, বিশ্ব রাজনীতির পেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের জন্য শান্তির কান্ডারি। বিশ্বযুদ্ধের জার্মানি ও জাপান এখনো তাদের ক্ষত ভুলতে পারেনি। যুদ্ধের বিরুদ্ধে কেন শান্তি দরকার তা বঙ্গবন্ধু উপলদ্ধি করতে পেরেছিলেন বলেই সারাবিশ্বে শান্তির বার্তা প্রচার করতেন।  প্রথম  ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরে শান্তির কেন প্রয়োজন তার ব্যাখা দেন উপ-উপাচার্য মহোদয়।
বিশেষ অতিথি কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. কে এম সালাহ উদ্দীন বলেন,  বিশ্বশান্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর মূলমন্ত্র। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য তিনি শান্তির পথ বেছে নিয়েছিলেন। জুলিও কুরি ছিল বাংলাদেশে প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কারের স্বীকৃতি। বিশ্বশান্তির অগ্রগদূত হিসেবে কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু। জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বার্তা দিয়েছেন সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধরেই বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।
সভাপতির বক্তব্যে ড. এম হাবিবুল্লাহ বলেন, আজকের এই আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে পড়ছে। বঙ্গবন্ধুর আলো নতুন করে উদ্ভাসিত হচ্ছে দেশব্যাপী জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মধ্য দিয়ে।