ভারত থেকে গম আমদানিতে বাধা নেই : বাণিজ্যমন্ত্রী


আজ বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির সভায় বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি : সংগৃহীত

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভারত থেকে গম আমদানিতে বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই। সরকারি পর্যায়ে গম আমদানিতে কোনো বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়নি। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশের আমদানিকারকরা অনুমতি নিয়ে যে কোনো পরিমাণ গম আমদানি করতে পারবেন। আমরা ইতোমধ্যে ভারতের সাথে যোগাযোগ করেছি। বাংলাদেশের প্রয়োজনে ভারত থেকে গম আমদানিতে কোনো সমস্যা হবে না। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় গম মজুত আছে। গম সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই।

বাণিজ্যমন্ত্রী আজ বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রয়োজনীয় ভোজ্যতেল মজুত রয়েছে, পর্যাপ্ত ভোজ্যতেল পাইপলাইনে রয়েছে, সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। ভোজ্যতেলের সংকট হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমদানিকারকদের প্রকৃত ক্রয়মূল্য ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে ভোজ্যতেলের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে এবং নির্ধারিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয় চলছে, নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে বিক্রয়ের কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভীতি সৃষ্টি করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, ন্যায়সংগত ব্যবসা পরিচালনা করলে কোন সমস্যা হবে না। ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশ আমরা আমদানি করে থাকি। আমরা আর আমদানিনির্ভর থাকতে চাই না। বিকল্প হিসেবে সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রাইজ ব্যান্ডের ভোজ্যতেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের চাহিদা পূরণের জন্য সরকার কাজ করছে। স্থানীয়ভাবে ৭ লাখ মেট্রিকটন রাইসব্যান্ড ভোজ্যতেল উৎপাদন করা সম্ভব, যা মোট দেশের চাহিদার ২৫ ভাগ পূরণ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, বাণিজ্যমন্ত্রী দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির উপদেষ্টা।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিবি দেশের এক কোটি পরিবারকে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকিমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় অব্যাহত রাখবে। আগামী জুন মাসের প্রথমার্ধেই এ পণ্য বিক্রয় শুরু হবে। নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে দোকান থেকে এসব পণ্য বিক্রয় হবে। প্রয়োজনে নির্ধারিত স্থানে ট্রাক থেকেও বিক্রয় করা হবে। এ পণ্য বিক্রয় সুশৃঙ্খল করা হয়েছে, সকল কার্ডহোল্ডার এ পণ্য পাবেন। দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত ও সরবরাহ রয়েছে। পেঁয়াজ সংকট হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। দেশীয় পেঁয়াজ উৎপাদনকারীদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে। ন্যায্যমূল্য পেলে বাংলাদেশের কৃষকরা পেঁয়াজ উৎপাদনে আরও আগ্রহী হবেন। অল্প সময়ের মধ্যে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক হবে।

এছাড়া, পেঁয়াজের নতুন জাত উদ্ভাবন করা হচ্ছে, আশা করা যায় আগামী ২০২৫ সালে বাংলাদেশ পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন হবে। সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করছে। অল্প সময়ের মধ্যে এর সুফল পাওয়া যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আফজাল হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আলী আহাদ খান, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা, এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমীন হেলালী, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।