কালোটাকা আর অপ্রদর্শিত আয় এক নয় : অর্থমন্ত্রী


অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফাইল ছবি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, কালোটাকা আর অপ্রদর্শিত আয় এক জিনিস নয়। কেননা কালোটাকা হলো দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা। আর অপ্রদর্শিত টাকা হলো সিস্টেম লস পদ্ধতি। সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে অনেক সময় সিস্টেম লসের কারণে টাকা প্রদর্শন করা হয় না। এ টাকা হলো অপ্রদর্শিত আয়।

আজ শুক্রবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করেন। রীতি অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী আজ প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

 

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অংশ নেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এতে অংশ নেন।

 

কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা নিয়ে কখনো আমি কথা বলিনি। আমি বলেছি, অপ্রদর্শিত আয় নিয়ে। আমরা দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে দেশে উদ্যোক্তা তৈরি করার সুযোগ করে দিয়েছি। এতে করে অপ্রদর্শিত আয়টা দেশের ব্যবসার কাজে আসবে। এবারের বাজেট ব্যবসাবান্ধব।

 

মুস্তফা কামাল বলেন, করোনা মহামারির কারণে দেশের অর্থনীতি প্রথমে কিছুটা হোচট খেলেও আমরা এটি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে আমরা অর্থনীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের অর্থনীতি এখন এগিয়ে চলেছে।

 

মন্ত্রী বলেন, বাজেটে কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়টিকে জোর দিতে গিয়ে বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করছি, বাজটকে জনবান্ধব করতে হলে ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসা সম্প্রসারণের দিকে জোর দেওয়া হয়েছে।

 

গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী। এবারের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার বাজেটের ব্যয় বেড়েছে ১২ ভাগ।

 

বাজেটে মোট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৬.২ শতাংশ। এই হার গত বাজেটে ছিল ৬.১ শতাংশ। বাজেটের এই ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক উৎস হতে এক লাখ এক হাজার ২২৮ কোটি টাকা সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে।

 

এ ছাড়া এবারের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া এবার উন্নয়ন ব্যয়ও বাড়ানো হয়েছে শতকরা ১৪ ভাগ। এবার উন্নয়ন খাতের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা।