চরম খাদ্য সংকটের মুখে পাকিস্তান, রেডক্রসের উদ্বেগ


পাকিস্তানে বিপর্যয়কর বন্যার কারণে দেশটি চরম খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানে বিপর্যয়কর বন্যার কারণে দেশটি চরম খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

মঙ্গলবার রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আন্তর্জাতিক ফেডারেশন (আইএফআরসি) এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটি (আইসিআরসি) হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে পাকিস্তানে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে যেখানে বন্যার আগে থেকেই ৪৩ শতাংশ মানুষ খাদ্যের অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে এমন শঙ্কা ছিল। খবর দ্য ডনের।

এদিকে, মঙ্গলবার জেনেভায় আইএফআরসি এবং আইসিআরসি জানায়, দেশটিতে সাম্পতিক বন্যায় ২ কোটি ১০ লাখ একর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে, ধ্বংস হয়ে গেছে খাদ্য ঝুড়ির ৬৫ শতাংশ চাল ও গমের মতো শষ্য আর মারা গছে ৭ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি গবাদিপশু।

অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণার প্রতিবেদন পর্যালোচনায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, বিশ্ব ভুল দিকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানের বন্যা উপদ্রুত এলাকা সফর করে আসা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস উল্লেখ করেন, ‘ইউরোপের তাপদাহ, পাকিস্তানের নজিরবিহীন বন্যা-এসব বিপর্যয়ের কোনোটিই স্বাভাবিক নয়’।

জাতিসংঘের ওই বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ুমণ্ডলে ক্রমাগত বাড়তে থাকা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ এবং এর পাশাপাশি বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে প্রাক-শিল্পায়ন তাপমাত্রার চাইতে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না দেওয়ার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতাদের ব্যর্থতা এই পৃথিবীকে জলবায়ু ঝুঁকির চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

ইতোমধ্যে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কিও ডংয়ু আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের বন্যায় কৃষি ক্ষেত্রে এর প্রভাব মোকাবেলায় দেশটির সরকারকে সাহায্য অব্যাহত থাকবে।

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মঙ্গলবার সোয়াতে জরুরিভাবে একটি কেন্দ্র খুলে ওষুধসহ চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ করে। সংস্থাটি অপারেশন থিয়েটার লাইটসহ অ্যানাসথেসিয়া মেশিন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ভ্যাকসিন, পুষ্টিকর উপাদান সমৃদ্ধ খাবার প্রভৃতি সরবরাহ করেছে।

সেখানে নতুন জরুরি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে আসা সংস্থাটির পাকিস্তান প্রতিনিধি ড. পালিথা মাহিপালা প্রতিরোধ করা যায় এমন রোগবালাই থেকে শিশুদের রক্ষায় টিকা দেওয়ার ওপর বিশেষ জোর দেন।

এদিকে রোমে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত জওহার সালিমের সঙ্গে এক বৈঠকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান জানান, জরুরি সাহায্যের আওতায় গবাদি পশুর টিকা দেওয়া, গো খাদ্য বিতরণ ও আসন্ন রবি মৌসুমের কৃষি উপকরণ বিতরণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।