চারঘাটে কোরবানী উপলক্ষে ব্যস্ত কামার পাড়া


মোঃ মোহাইমেনউল (স্বপন), চারঘাট প্রতিনিধি: আর মাত্র ক’দিন বাকী তাই দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে চারঘাটের কামাররা চাপাতি, দা, ছুরি, বটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কামার পট্টি টুং টুং শব্দে মুখরিত। কয়লায় আগুনে লাল টকটকে লোহা গরম করে পাকা লোহার তৈরি হাতুড়ি পিটিয়ে তৈরি করতে ব্যস্ত কোরবানীর পশু জবাই করার হাতিয়ার ।

ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানির ঈদ। পশু কোরবানি ও মাংস তৈরিতে অতি প্রয়োজনীয় এসব ধারালো অস্ত্র সরবরাহের জন্য কামাররা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই সময়টাতে কামারদের কাজের চাপ অনেক বেশী বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় তাদের আয়-রোজগারও।

চারঘাটের নিমপাড়া ইউনিয়নের কামার পাড়ার কামাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কামারদের প্রয়োজনীয় জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে গেছে। বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সে তুলনায় কামারদের মজুরি বাড়েনি। ফলে কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতৃক পেশা পরিবর্তন করছে।

কামার সম্প্রদায়ের কারিগর পূজন কর্মকার জানান, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম তেমন বাড়েনি।

চারঘাটের সর্ববৃহৎ হাট নন্দনগাছী সেখানেও রয়েছে ৪টি কামারের দোকান। সেখানেও জমেউঠেছে কাজের হুড়া-হুড়ী, সেখানকার কামার সুনিল কুমার জানান, কামার শিল্পের অতিপ্রয়োজনীয় কয়লা, লোহা দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। অথচ তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম প্রায় আগের মতোই রয়েছে। কুরবানির ঈদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অর্ডারের পর এখন ডেলিভারি শুরু হয়েছে। এ কারণে তাদের ব্যস্তাও বেড়ে গেছে।

নন্দগাছী বাজারের কামার কারিগর মেকছার আলী জানান, এ পেশায় পরিশ্রমের চেয়ে মুনাফা অনেক কম। দিনরাত সারাক্ষণ আগুনের পাশে বসে কাজ করতে হয়। তারপরেও গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে দিনরাত একাকার করে কাজ করে চলেছি। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হলেও তাদের পৈত্রিক পেশাকে এখনো বুকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এর পরেও অনেকে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন।