চিনির বিকল্প হিসেবে রাজশাহীতে স্টেভিয়া চাষ শুরু


ক্যাপশন : নিজ ক্ষেতে দাঁড়িয়ে আছেন স্টেভিয়া চাষী রেন্টু।

সালাউদ্দিন সরকার: চিনির বিকল্প হিসেবে পরিচিত স্টেভিয়া চাষ শুরু হয়েছে রাজশাহীতে। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা ও শীতলাই এবং চারঘাট উপজেলার বালিয়া ডাঙ্গায় এই পরীক্ষামূলক চাষাবাদ শুরু হয়। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সুগার-ক্রফ গবেষণা ইন্সটিটিউট (বিএসআরআই) থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে স্টেভিয়া চারা নিয়ে আসে।স্টেভিয়া চিনির তুলনায় ৩০-৪০ গুণ বেশি মিষ্টি। স্টেভিয়া চিনির বিকল্প হওয়ার পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে।

কাশিয়াডাঙ্গার স্টেভিয়া চাষী আতাউর রহমান রেন্টু জানান, তিনি নিয়মিত আখ চাষ করেন। সেই সুবাদে আখ ক্রপ গবেষণায় যোগাযোগ ছিলো। তারা তাকে একটি প্রজেক্টের আওতায় তাকে গত বছর ৩০০ টি চারা দেওয়া হয়। তিনি তা ৩ শতাংশ জমিতে রোপন করেন। পরবর্তীতে এ বছরের মার্চ মাসে তাকে আরো ৬০০ টি চারা দেওয় হয়। তিনি তা ৬ শতাংশ জমিতে রোপন করেন।

তিনি আরো বলেন, স্টেভিয়া চাষে এখন অনেকের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আগামীতে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করতে চান।

স্টেভিয়া চাষে আগ্রহী জনাব মার্শাল ও আরো ২ জন বলেন, তারা স্টেভিয়ার বাণিজ্যিক আকারে চাষ করতে আগ্রহী। এটির বাজারে চাহিদা রয়েছে। কিন্ত সে ভাবে চাষ করা হয় না। অনেকে এটির চাষ প্রক্রিয়া জানেন না। এর জন্য তিনি স্টেভিয়ার সুবিধা গুলো সকলকে জানিয়ে এটার আরো প্রসার করতে চান। তার সহকারী জানান, তিনি ও তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যার কারণে চিনির তৈরি কিছু খেতে পারতেন না। কিন্তু স্টেভিয়া পাওয়া পর তিনি তা নিয়মিত খেতে থাকেন। যার ফলে তাদের ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

বিএসআরআই’র উর্ধতন বৈজ্ঞানিক ও ইনচার্জ জনাব এইচ.এম. আল-আমীন জানান, স্টেভিয়া চিনির বিকল্প হিসেবে বিএসআরআই মহাপরিচালক থাইল্যান্ড থেকে ২০০১ সালে দেশে নিয়ে আসেন। বর্তমানে বিএসআরআই রাজশাহী উপকেন্দ্রের আওতায় একটি প্রজেক্টে ৩ জন চাষীকে প্রদর্শনী ক্ষেত করতে দেওয় হয়। তাদের প্রত্যেককে প্রথমে ৩০০ টি করে চারা দেওয়া হয়। স্টেভিয়া পাতায় ক্যালরির পরিমাণ ০ শতাংশ। যার কারণে এটি খেলে রক্তে কোনো সুগার বৃদ্ধি পায় না। ১ কেজি স্টেভিয়া পাতার বাজার মূল্য ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। স্টেভিয়ার মিষ্টতা চিনির থেকে ৩০-৪০ গুণ বেশি। যার কারণে খুব সামান্য পরিমাণ ব্যবহার করলেই হয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, স্টেভিয়ার গুড়া খেতে লাগলে অনেকের গন্ধ লাগে।যার কারণে এখনো বানিজ্যিক উৎপাদন সেই ভাবে সম্ভব হচ্ছে না। তবে জাপান,ইউরোপ সহ বেশ কিছু দেশে রিফাইন করে এটা সাদা করা হয়। যার ফলে গন্ধ কেটে যায়। বাংলাদেশেও বিএসআরআই মহাপরিচালক একটি প্রজেক্টের আওতায় মেশিন ক্রয় করার চেষ্টা করছেন। মেশিন পেলে স্টেভিয়ার বাণিজ্যিক উৎপাদন অনেক সহজ হবে এবং অনেকেই আগ্রহী হবে।