ছেলে জেলে, কান্নায় ভেঙে পড়লেন মা


মা-বাবার সঙ্গে আরিয়ান খান। ছবি : সংগৃহীত

মুম্বাইয়ের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে শুনানির পর গতকাল ছেলে আরিয়ান খান জামিন না পাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বিশিষ্ট ফ্যাশন ডিজাইনার গৌরী খান।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর, মাদক মামলায় গতকাল শুক্রবার জামিন নামঞ্জুর করে বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান ও ডিজাইনার গৌরী খানের ছেলে আরিয়ান খানসহ অভিযুক্তদের আর্থার রোডের জেলে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত। আর মুনমুন ধমেচাসহ অপর নারীকে পাঠানো হয় বাইকুল্লা নারী কারাগারে।

একটি ভিডিও অন্তর্জালে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে গাড়িতে বসে কাঁদছেন গৌরী খান। পুলিশের গাড়িতে করে যখন আরিয়ান খানকে নেওয়া হচ্ছে, তখন শান্ত দেখাচ্ছে এ স্টার কিডকে। কিন্তু গৌরী খান গাড়ির পেছনের আসনে বসে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে আছেন। এ সময় অশ্রুসিক্ত দেখা যায় তাঁকে।

গতকাল ছিল গৌরী খানের জন্মদিন। তিনি তিন সন্তানের জননী। বড় ছেলে আরিয়ান খান জেলে। বলিউডের বন্ধুবান্ধব তাঁর প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন।

বলিউড বাবলের খবর, আরিয়ান খান উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করবেন। যদি হাইকোর্ট এ স্টার কিডের জামিন মঞ্জুর করেন, তবে তাঁকে অন্তত আরও দুই রাত জেলে থাকতে হবে। আজ শনিবার ও কাল রোববার আদালত বন্ধ থাকায় উচ্চ আদালতে জামিন শুনানি হতে পারে সোমবার (১১ অক্টোবর)।

৮ অক্টোবর বিচারক আর এম নেরলিকার আরিয়ানসহ তাঁর বন্ধু আরবাজ মার্চেন্ট এবং মুনমুন ধমেচার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।

দুই দফা রিমান্ড শেষে ৭ অক্টোবর আরিয়ান খানকে ১৪ দিনের জন্য বিচারিক হেফাজতে পাঠান মুম্বাইয়ের আদালত। সেদিনই অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেন আরিয়ানের আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে।

৬ অক্টোবর মাদককাণ্ডে গ্রেপ্তার আরিয়ান খানসহ অভিযুক্তদের মুঠোফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য মুম্বাইয়ের গান্ধী নগরের একটি পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) দাবি করে, আরিয়ানের হোয়াটসঅ্যাপ আলাপচারিতায় ‘অবাক করার মতো এবং অপরাধমূলক’ প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের সঙ্গেও সংযোগের অভিযোগ তাদের।

৪ অক্টোবর আরিয়ান খানকে ফের জামিন না দিয়ে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন আদালত।

মাদককাণ্ডে দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর ৩ অক্টোবর বিকেলে আরিয়ান খানকে গ্রেপ্তার দেখায় এনসিবি। সেদিন সন্ধ্যায় মেডিকেল চেকআপের পর আদালতে তোলা হলে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাঁকে এক দিনের হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।

আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি এনডিপিএসের ৮সি, ২০, ২৭ ও ৩৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে। ২৩ বছর বয়সী আরিয়ান খানের পক্ষে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন মুম্বাইয়ের অন্যতম শীর্ষ আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে।

মুম্বাইয়ের উপকূলে একটি প্রমোদতরীতে চলমান মাদক পার্টি থেকে ২ অক্টোবর রাতে আরিয়ান খানসহ মোট আট জনকে আটক করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)। যাত্রীর ছদ্মবেশে কর্ডেলিয়া নামে বিলাসবহুল ওই প্রমোদতরীতে চেপে বসেছিলেন এনসিবির গোয়েন্দারা। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এনসিবি।