তানোরে ইউনিয়ন আ”লীগ সভাপতির সমর্থকের হামলায় যুবলীগ নেতাসহ আহত-৩


এইচএম.ফারুক,তানোর: রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের নব গঠিত সভাপতির সমর্থকরা মাতাল অবস্থায় ও জমির পূর্ব বিরোধের জের ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ওয়ার্ড যুবলীগের নেতাসহ ৩ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

আজ (৩ সেপ্টেম্বর) রোববার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের ইলামদহী গ্রামে ঘটে হামলার ঘটনাটি। আহতরা হলেন, ইলামদহী গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র হারুন ও তার ভাই ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আব্দুল হালিম ও মামাতো ভাই একই গ্রামের মৃত আব্বাসের পুত্র খাইরুল ইসলাম। আহতরা বর্তমানে মাথায় পায়ে সেলাই ব্যান্ডিজ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গত শনিবারে। সম্মেলনে পাঁচন্দর ইউপিকে দু’ভাগে বিভক্ত করে আ.লীগের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়। পাঁচন্দর উত্তরের সভাপতি করা হয় আলহাজ্ব ইসরাইল হোসেনকে। তার বাড়ি ইলামদহী গ্রামে। আর দক্ষিণের সভাপতি করা আব্দুল মতিন চেয়ারম্যানকে। এরা সভাপতি হওয়ার আনন্দে রোববার দুপুরে খাসি জবাই করে গ্রামের লোকজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। সেখানে হিজড়া নরতকি ও ব্যান্ড পার্টি ডিজে নাচগান করে।

এদিকে, আহত হারুন, হালিম ও খাইরুলের উপর হামলাকারী ইলামদহী গ্রামের হাজী ইসরাইল ওরফে ইয়ারজানের পুত্র মাতাল রজদুল, রুবেল ও ইয়ামিন জমির পূর্ব বিরোধের জের ওই গ্রামের আহত হালিমের পুত্রকে একা পেয়ে মারধর করে। হালিমের পুত্রকে মারধরের সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধারে ঘটনাস্থল পাকুয়া (প্যাক্যা) হাটে হারুন, হালিম ও খাইরুল যাবার সময় তাদের হত্যার উদ্দেশ্যে রজদুল ও তার ভায়েরা দেশীয় অস্ত্র হাসু বল্লম দিয়ে এলোপাথারী মারপিট শুরু করে। এতে হারুন, হালিম ও খাইরুল আহত অবস্থায় পড়ে থাকলে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগে হালিমের মাথার দুই জায়গায় সেলাই দেওয়া হচ্ছে ও মারাত্মক আহত খাইরুলের মাথা ও পায়ে সেলাই শেষ করে ব্যান্ডিজ দেয়া থাকলে রক্ত বের হচ্ছিল।

আহত হারুন, হালিম ও খাইরুলের সাথে আসা অনেকে বলেন, হাজী ইসরাইল আ.লীগের সভাপতি হওয়ার আনন্দে ডিজে নাচগান ও খাসি দিয়ে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে অন্যায় ভাবে হালিমের ছেলেকে মারার বিষয়গুলো সভাপতি হাজী ইসরাইলকে বলতে গেলে তিনি তাড়িয়ে দেন। এমনকি ঘর থেকে বের হননি তিনি। যদি কথা শুনতেন এবং বের হতেন তাহলে মারপিট হত না। কারণ রজদুলেরা হাজীর লোকজন। চোলাইমদ সেবন করে যে হাজী হিজড়া নরতকি এনে নাচগান করে পাড়ার পরিবেশ নষ্ট করতে পারে তার লোকজন হামলা করাটাই স্বাভাবিক। তিনি যদি সভাপতি না হত তাহলে রজদুলেরা এত সাহস পেত না। বিশেষ করে খাইরুল ও হালিমকে মেরে ফেলার জন্য হাসুয়া ও বল্লম দিয়ে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করে।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, পরিক্ষা নিরিক্ষা না করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। পুলিশ হাসপাতালে এসেছিল। রাতে থানায় অভিযোগ করা হবে।
নবনির্বাচিত সভাপতি আলহাজ্ব ইসরাইল হোসেন বলেন, দলীয় লোকজন ও গ্রামের যুবকরা জের ধরেছে খাসি দিয়ে খাওয়া দাওয়া করবে এবং আনন্দ উল্লাস করবে। এজন্য নাচগান সামান্য ভাবে হয়েছে। মারপিটের বিষয়টি অজানা। সন্ধ্যার পরে শুনেছি। আপনার লোক রোজদুলরা তারাই মেরেছে চারটার দিকে আর আপনি শুনছেন সন্ধ্যার পরে জানতে চাইলে তিনি জানান বাড়িতে ছিলাম তো এজন্য বলে এড়িয়ে যান তিনি।

তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, অভিযোগ হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।