নগরীতে ৫টি ফ্লাইওভার নির্মাণ ও সিটির আয়তন বাড়ানো হবে- মেয়র লিটন


স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। রাজশাহীতেও উন্নয়ন দৃশ্যমান, উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। রাজশাহী সিটির আয়তন কয়েকগুন বৃদ্ধি করা হবে। যানজটমুক্ত শহর গড়তে নগরীতে ৫টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। রাজশাহীর উন্নয়নে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে চাই।

বুধবার দুপুরে নগর ভবনের সিটি হলরুমে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে রাজশাহী মহানগরীর কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৯ সালে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দ প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা। করোনার কারণে দেড় বছর আমরা কোন কাজ করতে পারিনি। সে সময় মানুষকে বাঁচাতে কাজ করতে হয়েছে। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুদ্ধের প্রভাবে ডলার দাম বৃদ্ধি, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়া সহ সারাবিশ্বে নাভিশ্বাস এক অবস্থা দেখা দেয়। যার কারণে রাজশাহীতেও উন্নয়ন ব্যাহত হয়েছে। উক্ত প্রকল্পের মাত্র ১২০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছি। যার উন্নয়ন আপনাদের সামনে দৃশ্যমান। প্রকল্পে আরো ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আমি নির্বাচিন হলে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে আরো মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ নিয়ে আসবো।

সভায় রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহীকে যানজট মুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পাঁচটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। দুইটির টেন্ডার ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। আরো তিনটি প্রক্রিয়াধীন। এগুলোর কাজ নির্বাচনের পর শুরু হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাস্টারপ্ল্যান করতে চাই। এটি বুয়েটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুরের কোন কোম্পানির সাথে চুক্তি করে কাজটি করা হবে।

রাজশাহী সিটির আয়তন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান রিটন বলেন, রাজশাহী সিটি এলাকা ৯৬ বর্গকি.মি. থেকে বাড়িয়ে প্রায় ৩৫০ বর্গকি.মি থেকে ৪০০ বর্গকি.মি করতে চাই। সম্প্রসারিত এলাকার কৃষি জমি নষ্ট না করে প্রশস্ত ড্রেন, রাস্তা সহ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই।

তিনি আরো বলেন, পদ্মাচরে রিভার সিটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছি। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। আগামী জাতীয় নির্বাচনের পরে এই কাজটি এগিয়ে নেওয়া হবে। সেটা একটা দেখার মতো পরিবেশ হবে। সেটি বিদেশী পর্যটকদেরও রাজশাহীতে আসতে আগ্রহী করবে।

রাসিক মেয়র আরো বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, আরডিএ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সাথে আলাপ করে জায়গা চিহ্নিত করে সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

আগামী ২১জুন রাসিক নির্বাচন বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারো মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছি। আগামী ২১ মে মনোনয়নপত্র দাখিল করবো। এরপরে ২ জুন প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করবো।

খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বিএনপি ও তাদের সাথে যে ছোট দলগুলো রয়েছে, তারা বলছে, তারা নির্বাচনে অংশ নিবে না। এ প্রসঙ্গে আমরা বলেছে, নির্বাচন করবে কি করবে না, সেটি তাদের দলীয় বিষয়। কিন্তু এরপরে যেটি তারা বলছে, নির্বাচন হতে দেবে না। এটি অগণতান্ত্রিক, সংবিধানবিরোধী ও স্বেচ্ছাচারী একটা বক্তব্য। নির্বাচন বর্জন করে আবার যদি তারা ২০১৪/২০১৫ সালের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করে, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে তাহলে জনগণ তার সুমচিত জবাব দেবে। কারণ সবাই এখন উন্নয়ন চায়। দেশের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নীত হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে ইনশাল্লাহ।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু। সভা সঞ্চালনা করেন রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু। সভায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।