নীরবে এলো নতুন বছর


করোনায় ‘বিষময়’ ছিল ২০২০ সাল। দেশে দেশে শুধুই আহাজারি আর মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হয়েছে। শোকের মাতমে পৃথিবীর বাতাস কেবলই ভারি হয়েছে। এবারের নববর্ষ উদযানে সেই প্রতীকী শোকের বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে বিশ্ব। বিধি-নিষেধের মধ্যে অনেকটাই ম্লান ছিল ‘হেপি নিউ ইয়ার’ সেলিব্রেশন।

সিডনি থেকে নিউইয়র্ক- বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এ বছর আতশবাজি ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছিল সরকার। নিউজিল্যান্ড ছাড়া অধিকাংশ দেশে অনেকটা নীরবেই নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে মানুষ। বিশ্ববাসীর নববর্ষ উদযাপনের সব উল্লাস ছিল ঘরবন্দি।

বাংলাদেশ: করোনা মহামারির মধ্যে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে আতশবাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকায় ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তেমন কোনও আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও ২০২১ সালের প্রথম প্রহরে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়ে দেশবাসী। একইসঙ্গে নতুন দিনের প্রত্যাশা ফুটে উঠেছে বর্ষবরণে।

অস্ট্রেলিয়া: করোনা মহামারিতে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়াবাসী। সিডনির হার্বার ব্রিজে অন্যান্য বছর বর্ষবরণকে ঘিরে আলোক উৎসব আর আতশবাজি বর্ণিল ছটা দেখা গেলেও এ বছর সেখানকার দৃশ্য ছিল পুরোপুরিই বিপরীত। স্থানীয় পার্ক ও নাইটক্লাবগুলোতেও তালা ঝুলছিল।

চীন: খ্রিষ্টীয় নববর্ষ ঘিরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বার্ষিক আলোক উৎসব বাতিল করে শি জিন পিং সরকার। সেই সঙ্গে অন্য প্রদেশগুলোতেও বিধিনিষেদ কড়াকড়ি করা হয়।

জাপান: প্রতিবছরের মতো এবার নববর্ষে সম্রাট নারিহিতো এবং রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে চিরাচরিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হচ্ছে না।

ভারত: ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে জনসমাগম এড়াতে রাজধানী দিল্লিসহ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি শহরে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। করোনর বিধিনিষেধও আরও কঠোর করা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ড: কঠোর লকডাউন ও সীমান্ত বন্ধ থাকলেও বরাবরের মতো এবারও সরকারের কোনও ধরনের নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই নতুন বছরকে বরণ করছে দেশটির জনগণ।

ইংল্যান্ড: ব্রিটিশদের ভূমিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে, নতুন স্ট্রেইনটির দ্রুত বিস্তার ঘটায় বরিসন সরকার দেশবাসীকে নববর্ষ উদযাপনে বিধিনিষেধগুলো কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানান।

আয়ারল্যান্ড: দেশটিতে নববর্ষ ঘিরে বিধিনিধেষ আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরুনোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। ঘর থেকে বিশেষ প্রয়োজনে বের হলেও ৫ কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থান করতে হবে নাগরিকদের।

জার্মানি: আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত জার্মানিতে লকডাউন চলছে। আতশবাজি কেনাবেচায় রয়েছে নিষেধাজ্ঞা, জনসমাগম এড়াতেও কঠোর অবস্থানে দেশটির সরকার।

ফ্রান্স: রাত্রিকালীন কারফিউ জোরদার করেছে ম্যাক্রোঁ সরকার। নতুন বছর বরণকে সামনে রেখে জনসমাগম বন্ধে ১ লাখ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নেদারল্যান্ড: দেশটিতে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত লকডাউন চলবে। তবে অ্যামস্টারডাম স্টেডিয়ামে হবে নতুন বছরের কাউন্টডাউন।

তুরস্ক: মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে নববর্ষ উদযাপন সীমিত করতে ও জনসমাগম এড়াতে এরদোয়ান সরকার নতুন করে ৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র: করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশটির নাম যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি আক্রান্ত ও প্রাণহানিতেও অন্য সব দেশকে ছাড়িয়ে সবার উপরে আছে। এ বছর নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারের বিখ্যাত কাউন্টডাউন বন্ধ রয়েছে। সান ফ্রান্সিসকো কিংবা লাস ভেগাসের মতো শহরগুলোতেও নিষিদ্ধ রয়েছে আতশবাজি ও উদযাপন।