পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ বিক্রি শুরু, খুশি ইলিশপ্রেমীরা


দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের পাঠানো পদ্মার ইলিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। বহু প্রতীক্ষার পর গতকাল সোমবার রাতে বাংলাদেশ থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে ইলিশবোঝাই লরি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ঢোকে। কলকাতা সংলগ্ন হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাংলাদেশের ইলিশের বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকে হাওড়ার পাইকারি মাছ বাজারের শুরু হয় ওই ইলিশের বেচাকেনা।

জানা গেছে, এবার রাজ্যে দুর্গাপূজার আগেই ঢুকবে দুই হাজার ৪৫০ টন পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাওড়া ও কলকাতার অন্যান্য মাছের বাজারে এই ইলিশ ঢুকতে শুরু করেছে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘সোমবার রাতে প্রায় সাড়ে ৮ টন ইলিশ বাংলাদেশ থেকে এসেছে। যেটা মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন হোলসেল বাজারে যেমন- হাওড়া, পাতিপুকুর, বারাসাত প্রভৃতি স্থানে পাঠানো হয়েছে। মাছ এদিন সকালে বিক্রিও হয়েছে। যেমন এক কেজি সাইজের বাংলাদেশের ইলিশ মাছ এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ রুপিতে বিক্রি চলছে। বাংলাদেশের ইলিশের যেহেতু বরাবরই আলাদা একটা আকর্ষণ থাকে তাই মাছের চাহিদাও আছে। সাড়া ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ছোট সাইজ ৭০০-৮০০ রুপির মধ্যে আছে। সোমবার রাত থেকে মাছ আসা শুরু হয়েছে। দুই হাজার ৪৫০ টনের পুরো মাছ ধাপে ধাপে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের আনতে হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ বিষয়ে আবেদন করেছিলাম। রোববার বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে সম্মতি দিয়ে আমাদের জানানো হয়েছে, তারা আমাদের দুই হাজার ৪৫০ টন মাছ পাঠাবে।’

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পাইকারি মাছ বাজার পাইকপাড়ার ব্যবসায়ী রামকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এসেছে। মাছের সাইজ ভাল, গঠনও ভাল। এই ইলিশের চাহিদা থাকেই। পুজো কিছুদিন দেরি আছে। হাতে সময় পাওয়া যাবে। তাই এবার বাজার ভালো পাব আশা করছি।’

বারাসাত এলাকার এক পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী রফিক মন্ডল বলেন, ‘প্রতিদিনই সকালে দমদম থেকে হাওড়ার হোলসেল ফিস মার্কেটে আসি। বাজারে ৯০০-১০০০ রুপির মধ্যে ইলিশ পাওয়া গেলে তবু সকলে কিনে খেতে পারবে। আমি পাইকারি বাজারে এখানে ৯০০ রুপিতে মাছ কিনলাম। ৯০০ গ্রাম সাইজের মাছ। এটা বিক্রি করব হাজার রুপিতে। বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা সবসময়ই থাকে, মানুষ অপেক্ষা করে।’

২০১২ সালে শেখ হাসিনার সরকার ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় ইলিশ রপ্তানি কার্যত বন্ধ ছিল। বাংলাদেশ সরকার ২০২০ সালে ইলিশ রপ্তানিতে অনুমোদন দেয়। এরপর গত বছর পুজোর আগে উপহার হিসেবে ইলিশ পাঠাতে রাজি হয় বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গে গত বছর দুই হাজার ৮০ টন ইলিশ পাঠানোর অনুমতি দেয়।