ফলোঅনের শঙ্কায় বাংলাদেশ


বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের লড়াই। ছবি : সংগৃহীত

শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। দিনের শুরুতেই থিতু হয়ে যাওয়া বাবর আজম ও আজহার আলীকে ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশি বোলাররা। এরপর সময় যত গড়িয়েছে ততই হতাশা বেড়েছে সাকিব-মুমিনুলদের। প্রথমে ব্যাটিংয়ে দাপট দেখিয়ে শক্ত পুঁজি গড়ে নেয় পাকিস্তান। এরপর দাপুটে বোলিংয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়েও ধস নামায় বাবর আজমের দল। ব্যাটে-বলের হতাশায় ফলোঅন এড়ানোর শঙ্কা নিয়ে ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিন পার করল মুমিনুল হকের দল।

আজ মঙ্গলবার দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ২৬ ওভারে ৭৬ রান করে বাংলাদেশ। দিন শেষে উইকেটে ২৩ রানে অপরাজিত সাকিব আল হাসান। তাঁর সঙ্গে আছেন তাইজুল ইসলাম। ফলোঅন এড়াতে আরো ২৫ রান দরকার বাংলাদেশের।

এদিন সাড়ে ৯টার দিকে চতুর্থ দিনের খেলা মাঠে গড়ানোর কথা। কিন্তু আউটফিট ভেজা থাকায় যথাসময়ে খেলা শুরু হয়নি। শেষ পর্যন্ত ১০টা ৫০ মিনিটে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ দিনের শুরুতেই পায় জোড়া সাফল্য। দ্বিতীয় ওভারেই উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া আজহার আলীকে ফিরিয়ে দেন ইবাদত। এরপর থিতু হয়ে যাওয়া আরেক ব্যাটার বাবর আজমকে ফিরিয়ে দেন খালেদ আহমেদ। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটাই তাঁর প্রথম উইকেট।

১৪৪ বল খেলা পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক আজহার ৫৭ রানে ফিরে যান। ভাঙে ১২৩ রানের শক্ত জুটি। ইবাদতের বলটি অবশ্য উইকেট নেওয়ার মতো ছিল না। বাংলাদেশি পেসার শর্ট বল দেন। কিন্তু বলে তেমন গতি ছিল না। চার হজম করার মতোই ডেলিভারি ছিল। কিন্তু বেশি জোরে মারতে গিয়েই টাইমিংয়ে গড়বড় করেন আজহার। ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল উঠে যায় আকাশে। ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দেন কিপার লিটন দাস।

এরপর ৭৬ রান করা বাবরকে এলবির ফাঁদে ফেলেন খালেদ। ২০১৮ সালে অভিষেক হওয়া খালেদ নিজের তৃতীয় টেস্টে এসে পেলেন প্রথম উইকেটের স্বাদ। এরপর আর পাকিস্তানের একটি উইকেটও ফেলতে পারেনি স্বাগতিকরা।

বাবর-আজহার ফেরার পর আরেকটি শক্ত জুটি উপহার দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফাওয়াদ আলম। দুজনেই তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে স্কোরবোর্ডে ৩০০ ছুঁয়ে ইনিংস ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

প্রথম ইনিংসে মোট ৯৮.৩ ওভার খেলে ইনিংস ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ইনিংস শেষে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন ফাওয়াদ। তাঁর সঙ্গে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন রিজওয়ান।

এরপর প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই হতাশ করে বাংলাদেশ। বরাবরের মতো ওপেনিং ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। অভিষিক্ত মাহমুদুল হাসান জয় কিংবা সাদমান কেউই ভালো করতে পারেননি।

পাকিস্তানের অফ স্পিনার সাজিদ খানের বলে রীতমত ধোঁয়া দেখে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তাঁর স্পিনেই একে একে সাজঘরের পথে হাঁটেন মাহমুদুল, সাদমান, নাজমুল, লিটন, মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। মাত্র চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামা সাজিদ বাংলাদেশের ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেননি। তাঁর স্পিনে ফলোঅন এড়ানোর শঙ্কায় পড়ে যায় বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়ের এই অস্বস্তি নিয়েই দিন শেষ করে বাংলাদেশ। আলোর স্বল্পতায় এক ঘণ্টা আগেই দিনের খেলা শেষ করতে হয়। সবমিলে চতুর্থ দিনে আজ ৬১.১ ওভার খেলা হয়, খেলা হওয়ার কথা ছিল ৮৬.৪ ওভার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ৯৮.৩ ওভারে ৩০০/৪ (ডি.) (আগের দিন ১৮৮/২) (আবিদ ৩৯, শফিক ২৫, আজহার ৫৬, বাবর ৭৬, ফাওয়াদ ৫০*, রিজওয়ান ৫৩*; ইবাদত ২৩-৩-৮৮-১, খালেদ ১৭.৩-৫-৪৯-১, সাকিব ১৯-৭-৫২-০, তাইজুল ২৫-৬-৭৩-২, মিরাজ ১৪-২-৩৭-০)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২৬ ওভারে ৭৬/৭ (সাদমান ৩, মাহমুদুল ০, নাজমুল ৩০, মুমিনুল ১, মুশফিক ৫, লিটন ৬, সাকিব ২৩*, তাইজুল ০; সাজিদ ১২-৩-৩৫-৬, নুমান ১২-২-৩৩-০, আফ্রিদি ১-০-১-০)।