বড়াইগ্রামে হত্যা মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন 


নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামে কৃষক আবুল খায়ের ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন, দুইজনকে দুই বছর করে কারাদন্ড ও তিনজনকে খালাসের আদেশ দিয়েছে আদালত। অপর অভিযুক্ত একজন মামলা চলাকালে মৃত্যু বরণ করে।

মঙ্গলবার বিকেলে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কামরুন্নাহার বেগম এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কালিকাপুর গ্রামের মৃত আনা মুন্সির ছেলে নুরু মুন্সি ও নুরু মুন্সির ছেলে শরিফুল ইসলাম। দুই বছর করে কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নুরু মুন্সির দুই ছেলে সুজন মুন্সি ও সুমন মুন্সি। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন,আনা মুন্সির ছেলে চান্দু মুন্সি,শরিফুল ইসলামের স্ত্রী শিখা বেগম ও চান্দু মুন্সির শামীম হোসেন। এদিকে মামলা চলাকালীন অবস্থায় রোকেয়া বেগম নামে এক অভিযুক্ত মৃত্যু বরণ করেন।

মামলা সুত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কারিকাপুর গ্রামের কৃষক আবুল খায়েরের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল প্রতিবেশী নুরু মুন্সির। ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী সকালে আবুল খায়েরের বাড়ীর সামনে নুরু মুন্সি ও তার পরিবারের সদস্যরা আবুল খায়ের পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করছিল।

এ সময় আবুল খায়ের ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই একপর্যায়ে নুরু মুন্সির লোকজন ধারালো ফালা দিয়ে আবুল খায়ের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালায় এবং আবুল খায়ের ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে ফালা দিয়ে পেটে আঘাত করে। এ সময় তাদের বাঁচাতে এলে লোহার রড ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আরো ৬ জন রক্তাক্ত জখম হয়।

পরে আবুল খায়ের ও তার স্ত্রী সহ আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আবুল খায়েরকে মৃত ঘোষণা করেন এবং বাঁকীদের চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুরু মুন্সির স্ত্রী আনোয়ারা বেগমও মারা যান।

এ ঘটনায় নিহত আবুল খায়েরের মেয়ে হোসনে আরা বাদী হয়ে নুরু মুন্সি সহ ৮জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। দীর্ঘ ১০ বছর ৩ মাস মামলার স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহণ শেষে আদালত মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।