মায়ার্সের বিশ্ব রেকর্ড, উইন্ডিজের ঐতিহাসিক জয়


৩৯৪ রানের লক্ষ্যটাও হালে পানি পেল না। শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশের। জয়ের স্বপ্ন তো দূরাশা, দিনশেষে পরাজয়ের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো টিম টাইগারসকে। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া জয় পেয়েছে সফরকারী উইন্ডিজ। আর সেই জয়ের পথে ইতিহাস গড়া অতিমানবীয় ইনিংস খেলেছেন কাইল মায়ার্স। ক্যারিবীয়ানদের রূপকথার এই জয়ে ২১০ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেছেন এই বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। সঙ্গে বান্নারের ৮৬ রানের ইনিংসটিও থাকবে স্মরণীয় হয়ে।

 

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৪৩০ রানের জবাবে ২৫৯ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। স্বাগতিকরা ১৭১ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি ও লিটন দাসের হাফসেঞ্চুরিতে ২২৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। আর তাতে ক্যারিবীয়ানদের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৯৫ রান।

 

চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে ৫৯ রানে তিন উইকেট হারানো উইন্ডিজ যখন কূল হারিয়ে হাতরাচ্ছিল, তখন থেকেই দাঁতে দাঁত কামড়ে লড়াইটা শুরু করেছিলেন মায়ার্স ও বান্নার। ৩ উইকেটে ১১০ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শেষ করার পর পঞ্চম দিনেও প্রথম সেশনে অবিচ্ছিন্ন থাকে এই জুটি। ২১৬ রানের জুটি গড়ে দলীয় ২৭৫ রানে সাজঘরে ফিরেন বান্নার। এরপরই আউট হন জার্মেইন ব্ল্যাকউড।

 

কিন্তু মুমিনুল-মুশফিকদের সব আশায় গুড়েবালি ছিটিয়ে অভিষেক টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করে ইতিহাসের পাতায় সোনার অক্ষরে নিজের নাম লিখালেন মায়ার্স। একপ্রাপ্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই ক্যারিবীয়ান।

 

অবিশ্বাস্য ও রোমাঞ্চকর এক ইনিংসে মায়ার্স আবারও মনে করিয়ে দিলেন, এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য। এখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ার সঙ্গে টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের বিরল নজির গড়লো ক্রেগ ব্রাথওয়েটের দল। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৩১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৩ উইকেটে জিতেছিল উইন্ডিজ।

 

টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৪ বছরের ইতিহাসে অভিষেখ টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে দ্বিশতক হাঁকানো একমাত্র ব্যাটসম্যান এখন কাইল মায়ার্স। ৭ ছক্কা ও ২০ চারে দলকে জয়ে এমন স্মরণীয় ইনিংস খেলেন তিনি। ক’দিন আগেও যিনি ছিলেন ব্রাত্য, সেই মায়ার্সকে এখন নিশ্চিতভাবেই স্যালুট জানাবে ক্রিকেট বিশ্ব।